New York Bangla Life
বাংলাদেশ

জাতীয় বেঈমান নজরুল ইসলাম ওরফে আসিফ নজরুল

আসিফ নজরুল ইসলাম ২০১৩-১৪ সালে জাতির যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে জামাত-শিবিরের পক্ষে ছিল, গণজাগরণ মঞ্চের বিরোধিতা করেছিল, হেফাজতের পক্ষে ছিল, সে যদি আন্দোলনকারী ছাত্রদের আইডল হয়, তবে দেশের জন্য আরও একটা মুক্তিযুদ্ধ বাকী আছে।

বাংলাদেশের ইতিহাস জীবনের মতোই চলমান। যারা ইতিহাসবিদ তারা অনেক নদীর শাখা এক মোহনায় গিয়ে মিশতে দেখতে পান।

আসিফ নজরুলের প্রকৃত নাম মো. নজরুল ইসলাম। ঢাকা ইউনিভার্সিটির ল’ ডিপার্টমেন্ট থেকে পাশ করে কিছুদিন ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে কাজ করেন, এরপর যোগ দেন বিচিত্রায়। ৯০ এর গণঅভ্যুত্থানের সময় আসিফ নজরুল ছাত্রদলে ছিলেন। বিশেষ করে ছাত্রনেতা অভি’র সাথে ছিল তার খুবই ঘনিষ্ঠতা। অভি’র চরিত্রকে নির্ভর করে আসিফ নজরুল তার প্রথম উপন্যাস ‘ক্যাম্পাসের যুবক’ লিখেন।

বিচিত্রায় শাহরিয়ার কবিরের সাথে তরুণ আসিফের পরিচয় কলিগ হিসেবে। সে সাংবাদিক হওয়ার উচ্চাশায় শাহরিয়ার কবিরের ঘনিষ্ঠ হওয়ার জন্য যোগ দেয় ঘাতক দালাল নির্মূল (ঘাদানি) কমিটিতে। বয়সে তরুণ, তার উপর আইনজীবি এ বিবেচনায় শহীদ জননী জাহানারা ইমাম আসিফ নজরুলকে সারাদেশ থেকে সংগ্রহ করা মাঠ পর্যায়ের রাজাকারদের যে তথ্য তা সমন্বয় করে রিপোর্ট জমা দেয়ার দায়িত্ব দেন।

২৬ মার্চ ১৯৯২ সালে রমনায় ঘাদানি’র যে প্রতীকী আদালত বসে সে সেখানে গোলাম আযমের আইনজীবীর ভূমিকা পালন করেন।

শহীদ জননী জাহানারা ইমামসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে তৎকালীন বিএনপি সরকার রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করে। সেখানে তার নাম নজরুল ইসলাম হিসেবে নথিবদ্ধ আছে।

১৯৯৩ এর ১৬ ডিসেম্বর ঘাদানি’র দ্বিতীয় পর্যায়ের নথি পেশ করার কথা ছিল যার মূল কাগজপত্র ছিল আসিফ নজরুলের কাছে। তার ঘাদানি’র সবাইকে ডিঙিয়ে এ সময় ঘনিষ্ঠতা গড়ে তোলেন আইন বিভাগের তৎকালীন বিভাগীয় প্রধান এরশাদুল বারীর সাথে। বারীর সুপারিশে তিনি কমনওয়েলথ বৃত্তি লাভ করেন।

ক্যান্সার আক্রান্ত শহীদ জননী জাহানারা ইমাম বহুবার বলার পরে আসিফ নজরুল একটি যেনতেন রিপোর্ট জমা দিয়ে কমনওয়েলথ স্কলারশিপ নিয়ে ইংল্যান্ড চলে যায় ১৯৯৪ সালে।

তার পুরো ভূমিকা ও তার বেঈমানির কথা লিপিবদ্ধ আছে শাহরিয়ার কবিরের লেখা ‘জাহানারা ইমামের শেষ দিনগুলি’ বইয়ে। তার এমন ব্যবহারে শহীদ জননী ঝরঝর করে কেঁদে ফেলেন শাহরিয়ার কবিরের হাত ধরে।

এখানে আশ্চর্যের বিষয়, যেখানে শহীদ জননী রাষ্ট্রদ্রোহীতার মামলা মাথায় নিয়ে মৃত্যুবরণ করেন সেখানে একই মামলার আসামি আসিফ নজরুল কিভাবে দেশ ত্যাগ করলো?

জাতীয় বেঈমান তো সবাই হতে পারে না, নজরুল ইসলাম ওরফে আসিফ নজরুল হতে পেরেছে।

ভিন্ন দলে থাকা, ভিন্ন মতে নিমগ্ন হওয়া, ভিন্ন রঙ ধারণ কোনটাই নিষিদ্ধ নয়-কিন্তু ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নথি গায়েব করে এরশাদুল বারীর রেকমেন্ডেশনে রাষ্ট্রদ্রোহীতার মামলার আসামীর কমনওয়েলথ বৃত্তি নিয়ে পলায়ন আধুনিক মীরজাফরের চেয়ে কোন অংশে কম না।
—————————–

আরো খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন এবং ভিডিও দেখতে এখানে ক্লিক করুন

Related posts

গাজী টায়ারসে আগুন: প্রতিবেদনেও নিখোঁজ ১৮২

Ny Bangla

‘দ্বিতীয় বিপ্লবের’ নামে এবারের লক্ষ্য বিএনপি

Ny Bangla

রাষ্ট্রপতি পদে থাকা বা না থাকা সাংবিধানিক নয়: নাহিদ ইসলাম

Ny Bangla

চট্টগ্রামে শিক্ষামন্ত্রীর বাসায় হামলা

Ny Bangla

কে বলেছে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে জামায়াত ছিল না: ফারুকী

Ny Bangla

অ্যামেরিকার সঙ্গীতের মূলধারার প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশী শিল্পী পাপী মনা

producer

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More

Privacy & Cookies Policy