New York Bangla Life
Image default
বাংলাদেশ

গোয়েন্দা সতর্কতা উপেক্ষা করেন শেখ হাসিনা? 

গোয়েন্দা সতর্কতা উপেক্ষা করেন শেখ হাসিনা? 

আমি নিশ্চিত আপনারা ভুলে গেছেন ২০২৩ সালের ১৫ ডিসেম্বরের কথা। এই দিনে আচমকাই রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া যাখারোভা এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বললেন, বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনে যদি শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতায় আসে তাহলে অ্যামেরিকা তার সকল ক্ষমতা প্রয়োগ করবে শেখ হাসিনা সরকারকে উৎখাতের জন্য।

অ্যামেরিকার সকল ক্ষমতা বলতে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বললেন, অ্যামেরিকা ‘এরাব স্প্রিং’ অর্থাৎ আরব বসন্তের মতো একটি সিনারি তৈরি করবে। যে আরব বসন্ত আনতে ব্যাবহার করা হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের, কলেজ,স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের।

ডোনাল্ড লু ও পিটার ডি হাস তাদের বন্ধুত্বের সময়কাল প্রায় ৩১ বছর ।বাংলাদেশে অ্যামেরিকা রাষ্ট্রদূত হিসেবে ছিলেন পিটার ডি হাস। আপনারা নিশ্চই সেটা ভুলে যাননি।

এই পিটার হাসকে যখন বাংলাদেশে নিয়োগ দেয়া হয় তখন তার উপর স্পেশাল এসাইনমেন্ট ছিলো ইন্দো প্যাসিফিক রিজিয়নে চায়নার প্রভাবকে হ্রাস করা এবং বাংলাদেশকে সদস্য কিংবা স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার হিসেবে যুক্ত করা।

কিন্তু পিটার ডি হাস কোন সাফল্য ঘরে তুলতে পারেননি। এরপর বাংলাদেশে নির্বাচনের আগে কয়েকবার এসেছিলেন ডোনাল্ড লু। নানাবিধ চেষ্টা চরিত্র করেছিলেন ইলেকশন নিয়ে। সাফল্য পাননি।

অ্যামেরিকা সব সইতে পারে কিন্তু ফরেন পলিসিতে অপমান মনে রাখে হাজার বছর।

অ্যামেরিকা ফরেন পলিসিতে বাংলাদেশের নিকট মারাত্মক ভাবে পরাজিত হয়। এই অপমান তারা সহ্য করে নেবে এটা ভাবা বোকামি ছাড়া আর কিছু নয়। পিটার হাস ও ডোনাল্ড লু অর্থাৎ অ্যামেরিকা প্রশাসনের কাছে বাংলাদেশ একটি পরাজয়ের নাম।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রায়ই পরোক্ষভাবে তাঁর মৃত্যুর কথা বলেন।কারন তিনি অ্যামেরিকার প্রতিশোধ স্পৃহার কথা জানেন। তিনি বলেন মৃত্যুকে তিনি ভয় পান না। কেন বলেন, আমরা এখন তা বুঝতে পারি।

রাশিয়া ১৫ ডিসেম্বর ২০২৩ সালে পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছিলো যে নির্বাচনের পর বাংলাদেশে ছাত্র-বিক্ষোভ হবে এবং আরব বসন্তের মত অবস্থা তৈরী হবে।

চলমান জুলাইতে এসে এই বিক্ষোভের দেখা আমরা পেলাম।

এর আগে অ্যামেরিকা গোয়েন্দা সংস্থা সি আই এ তাদের সমস্ত সহযোগীদের মাঠে নামাবার প্রস্তুতি সম্পন্ন করে দিয়েছিলো। এই সহযোগীরা কেউ কেউ প্রতিষ্ঠান, কেউ কেউ ব্যাক্তি।

লক্ষ্য করার বিষয় হলো, ঘটে যাওয়া পুরো ঘটনা।

অ্যামেরিকা গোয়েন্দা সংস্থা কিভাবে কোটার বিষয়টিকে নজরে রেখেছিলো। কিভাবে আদালতে দায়ের করা রিটের দিকে নজর রেখেছিলো।

কিভাবে হাইকোর্টের দিকে নজর রেখেছিলো। কিভাবে এই বিষয়টিকে একটি ক্ষোভের কন্টেন্ট হতে পারে, তা ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে পেরেছিলো।

রাষ্ট্র নিশ্চই এই রিট দায়ের, রিটের পরে রায়, হাইকোর্ট সমস্ত কিছুই ক্রনোলজিকালী মিলিয়ে ও খতিয়ে দেখবেন এবং প্রতিটি যায়গায় তথ্য সংগ্রহ করবেন।

অ্যামেরিকাদের ষড়যন্ত্রে এই প্রজন্মের সন্তানেরা পা দিয়েছেন কোন কিছু না বুঝেই। আসলে এই গভীর ডিপ্লোম্যাসি তাদের বোঝার কথাও নয়।

আমাদের তরুনেরা মুক্তিযুদ্ধ দেখেনি, মুক্তিযুদ্ধের পরের সময় দেখেনি। অ্যামেরিকা-পাকিস্তান ষড়যন্ত্রে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ড এবং তার পরবর্তী ঘটনাও খুব জানে বলে আমার অন্তত মনে হয়না।

একটা সময় মানুষ বুঝতে পেরেছিলো যে, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ড কি কি হিসেব নিকেশের মধ্যে হয়েছিলো এবং অ্যামেরিকা-পাকিস্তানি সংস্থাগুলো আসলে কি চেয়েছিলো। কিন্তু ততদিনে যা ক্ষতি হবার এই দেশের হয়ে গিয়েছিলো।

এবারো তারা এখন যা বুঝতে পারছেনা, বুঝবে কুড়ি বছর পরে। তখন মাথা চাপড়াবে আর কাঁদবে কিন্তু কিছু করার থাকবে না।

তারা বিলাপ করবে, আক্রান্তবোধ করবে এবং বলতে থাকবে আমাদের সর্বনাশ হয়ে গেছে। কিন্তু কেউ তাদের বাঁচাতে আসবে না।

প্রজন্ম আমাকে জিজ্ঞেস করতে পারে, কই আমরা তো মিছিলে গিয়েছি, সভাতে গিয়েছি রায় জেনে। এখানে আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থা আসবে কিভাবে?

এই যায়গাতেই তো অংক। ভাবতে হবে এখানেই।

কেন রিট হয়েছে? হাইকোর্টের রায় কেন এমন হলো? কারা রাস্তায় নেমেছিলো আগে? কেন নেমেছিলো আপীলেট ডিভিশানের রায়ের আগে?

কারা পানি দিলো? কারা নেট দিলো? কারা এত সাহায্য করলো নেপথ্যে? কারা কাছে এসে উষ্কে দিলো? সমন্বয়কদের গত ৫ বছরের হিসেব নিকেশ কি? কারা এরা?

কোন পত্রিকা এত কাভারেজ দিলো শুরুতে? কেন দিলো? কারা ফোন করে বার বার খোঁজ নিয়েছে? কারা সব ধরনের সাহায্য দেয়ার জন্য উন্মুখ হয়েছিলো? কেন ছিলো?

শেখ হাসিনাকে প্রজন্ম ভুল ভাবে অনুবাদ করলে সেটার একটা লম্বা দায় এই অস্থির জেনারেশনকেই চুকোতে হবে পরবর্তীতে।

আমাদের কৈশোরে আমাদের বাবা ছিলো আমাদের অন্যতম প্রধান শত্রু। বন্ধুদের সাথে মিশতে দেয়না, কনসার্টে যেতে দেয়না, বন্ধুদের সাথে ট্যুরে যেতে দেয়না, একা ঘর থেকে বের হতে দেয়না। কত অভিযোগ…

আজ সব বুঝি। সব অনুধাবন করি। কিন্তু আব্বার হাত ধরে দেখি তাঁর বয়স ৮৩। সময় গিয়েছে চলে স্রোতের মতন…

আমার এই লেখাটা সংরক্ষন করে রাখুন। কাজে লাগবে। আমি এই প্রজন্মের সাথে এই মুহুর্তে দ্বিমত পোষন করছি বলে তাদের অনেকেই আমার বিরুদ্ধে। কিন্তু তারা জেনে রাখুক, আমি স্পস্টবাদী একজন মানুষ।

আমাকে এখন খারাপ লাগবে। কিন্তু এক সময় আমাকে এরা খুঁজে বের করে পড়বে। আমার কাছে এসে তাঁরা অনুতপ্ত হবে।

আমি আর যাই করি,এই প্রজন্মকে অন্তত মিসগাইড করবোনা।


সংগ্রীহিত


আন্তর্জাতিক খবর দেখতে এখানে ক্লিক করুন এবং ভিডিও দেখতে এখানে ক্লিক করুন

Related posts

বয়সসীমা ৩৫ করার  প্রত্যাশীদের  ওপর পুলিশের টিয়ারশেল নিক্ষেপ

Ny Bangla

টাঙ্গাইলে শিক্ষার্থীদের সাথে বিক্ষোভে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের ঢল

Ny Bangla

কোটা আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার নিন্দা জানালো ম্যাথিউ মিলার

Ny Bangla

নয়াপল্টনে বিএনপির সমাবেশ

Ny Bangla

অন্তর্বর্তী সরকারের ঘাড়ে ১৮ লাখ কোটি টাকা ঋণের চাপ

Ny Bangla

ড. মুহাম্মাদ ইউনুসকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা করার ঘোষণা দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম৷

isa

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More

Privacy & Cookies Policy