গুলশানের হোলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলায় নিহত পুলিশ কর্মকর্তার স্মরণে নির্মিত ভাস্কর্য ‘দীপ্ত শপথ’ ভেঙে এর ওপর নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরীরের পোস্টার লাগানো হয়েছে। কে কখন এই ভাস্কর্যটি ভেঙেছে তা জানা যায়নি। এ বিষয়ে গুলশান থানার কোনো কর্মকর্তাই কোনো মন্তব্য করেননি।

বাধন মুন্সি নামে একজন নিজের ফেইসবুকে লেখেন, হোলি আর্টিজানে নিহত পুলিশ অফিসার স্মরণে গুলশানে নির্মিত মনুমেন্ট ভেঙে নিষিদ্ধ ‘জঙ্গি সংগঠন’ হিযবুত তাহরীর তাদের পোস্টার লাগিয়েছে।

সবশেষ দেখা যায়, ভাস্কর্য ‘দীপ্ত শপথ’ ভাঙচুরের কিছু অংশ পড়ে আছে। হিযবুতের পোস্টারও রয়েছে।
২০১৬ সালের ১ জুলাই গুলশানের কূটনৈতিক এলাকার হলি আর্টিসান রেস্তোরাঁয় আগ্নেয়াস্ত্র, চাপাতি ও গ্রেনেড নিয়ে ৫ জঙ্গি ঢুকে সেখানে উপস্থিত সবাইকে জিম্মি করে। পরে জঙ্গিরা ৩ বাংলাদেশি, ৭ জাপানি, ৯ ইতালীয় ও ১ ভারতীয় নাগরিককে হত্যা করে।
সেনা কমান্ডোদের উদ্ধার অভিযানে নিহত হয় জঙ্গিরা। ১২ ঘণ্টার সংঘর্ষে ২ জন পুলিশ কর্মকর্তা এবং ১ জন ক্যাফে শেফও নিহত হন। পরে রেস্তোরাঁর আহত ১ কর্মীও মারা যান।
২০১৮ সালে, তৎকালীন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার নিহত পুলিশ কর্মকর্তাদের স্মরণে পুরানো গুলশান থানার সামনে ‘দীপ্ত শপথ’ নামে একটি ভাস্কর্য উদ্বোধন করেন।

গত ৫ আগস্ট গণআন্দোলনে শেখ হাসিনার সরকারের পতন হয়। এরপর থেকে দেশে ভাস্কর্য ধ্বংসের চেষ্টা চোখে পড়ে । ওই দিন থেকেই নিষিদ্ধ হিযবুত তাহরীর প্রকাশ্যে মিছিল শুরু করে।
১০ আগস্ট জুমার নামাজের পর রাজধানীর বায়তুল মোকাররম থেকে বিক্ষোভ মিছিল করেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। এরপর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন তারা।
২০০৯ সালের ২২ অক্টোবর আওয়ামী লীগ সরকার হিযবুত তাহরীরকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। এ সময় সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, এ সংগঠনের কার্যক্রম দেশের জননিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ।
বাংলাদেশে ইসলামী খেলাফত প্রতিষ্ঠার কথা বলে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে হিযবুত তাহরীর সক্রিয় হয়ে ওঠে। উগ্রবাদ ছড়ানোর দায়ে বিশ্বের বেশ কয়েকটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ করা হয়।