বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলীয় জেলাগুলোতে বন্যার কারণ হিসেবে ভারতের উজানে বাঁধ খুলে দেওয়ায় দেশটির সরকার প্রতিক্রিয়া জানান।
এক বিবৃতিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, “ত্রিপুরায় গোমতী নদীর উজানে ডাম্বুর বাঁধ খুলে দেওয়াকে বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলের জেলাগুলোতে বন্যা পরিস্থিতির কারণ হিসাবে বর্ণনা করে বাংলাদেশে যে উদ্বেগ প্রকাশ করা হচ্ছে, তা আমরা দেখেছি। এটা তথ্যগতভাবে সঠিক নয়।”
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ ও ভারতের গোমতী নদী সংলগ্ন এলাকায় গত কয়েক দিনে এ বছরের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়। বাংলাদেশ বন্যায় প্লাবিত হয়েছে মূলত বাঁধের ভাটির এলাকায় পানির কারণে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ডাম্বুর বাঁধটি সীমান্ত থেকে অনেক দূরে, বাংলাদেশের ১২০ কিলোমিটার। প্রায় ৩০ মিটার উঁচু এই বাঁধের মধ্য দিয়ে একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র চলে। সেখান থেকে ত্রিপুরা হয়ে বাংলাদেশ ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পায়।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলে, “২১ অগাস্ট থেকে পুরো ত্রিপুরা এবং বাংলাদেশের পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতে ব্যাপক বৃষ্টিপাত হচ্ছে। ব্যাপক অন্তঃপ্রবাহের কারণে পানি নিজে থেকে বের হওয়ার ঘটনা দেখা গেছে।”
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ থেকে ১২০ কিলোমিটার নদীর উজানে তিনটি ওয়াটার মনিটরিং স্টেশন রয়েছে। যার মধ্যে বন্যার হালনাগাদ তথ্য অমরপুর স্টেশন থেকে দ্বিপাক্ষিক প্রটোকলের আওতায় বাংলাদেশকে দেওয়া হয়।
“পানি বৃদ্ধি পাওয়ার উর্ধ্বমুখী প্রবণতার তথ্য ২১ অগাস্ট বিকাল ৩টা পর্যন্ত বাংলাদেশকে দেওয়া হয়। সন্ধ্যা ৬টায় বন্যার কারণে বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় যোগাযোগে সমস্যা তৈরি হয়।”
এই পরিস্থিতিতে জরুরী তথ্য আদান-প্রদানের জন্য অন্য উপায় অবলম্বন করে যোগাযোগ বজায় রাখার চেষ্টা করার কথা জানান ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ভারত ও বাংলাদেশের অভিন্ন নদীতে বন্যা একটি যৌথ সমস্যা যা উভয় পক্ষের জনগণের জন্য দুর্ভোগের কারণ এবং এটি সমাধানের জন্য ঘনিষ্ঠ পারস্পরিক সহযোগিতা প্রয়োজন।
“যেহেতু দুটি দেশের ৫৪টি অভিন্ন আন্তঃসীমান্ত নদী রয়েছে, তাই নদীর পানি-বিষয়ক সহযোগিতা আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পৃক্ততার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আমরা দ্বিপক্ষীয় পরামর্শ ও প্রযুক্তিগত আলোচনার মাধ্যমে পানি সম্পদ ও নদীর পানি ব্যবস্থাপনার সমস্যা ও পারস্পরিক উদ্বেগসমূহের সমাধানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”

previous post
next post