বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর বাসায় আগুন দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা। পরে ওই বাড়ি থেকে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।
সোমবার সন্ধ্যায় নগরীর কালীবাড়ি রোডে সাদিক আবদুল্লাহর পৈতৃক বাড়ি ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এতে দোতলার একটি বড় অংশ পুড়ে যায়। এ সময় সাদিক আবদুল্লাহ বাড়িতে ছিলেন না।
বরিশাল ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক মো. বেলাল উদ্দিন জানান, রাত সাড়ে ১০টার দিকে তারা খবর পেয়ে রাত সাড়ে ৮টার দিকে সাদিক আবদুল্লাহর বাড়িতে যান। তারা সেখান থেকে তিনটি লাশ উদ্ধার করে। লাশগুলো শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। দগ্ধ হওয়ায় তাদের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।
শেখ হাসিনা দেশত্যাগের খবর ছড়িয়ে পড়লে বরিশালে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ রাজপথে নেমে উল্লাস করতে থাকে। এ সময় আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়িঘর ও বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা, ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
দুপুর আড়াইটার দিকে নগরীর ২০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরের জিয়াউর রহমান (বিপ্লব) কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়। অফিসের সব মালামাল বের করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এরপর সাবেক সিটি মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর বাসভবন, সদর রোডে মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয়, সিটি করপোরেশনের অ্যানেক্স বিল্ডিং, কাকলী মোড় পুলিশ বক্স, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাশে বঙ্গবন্ধু মিলনায়তন, বর্তমানে ভাড়া বাড়ি। নগরীর কালুশাহ রোডে সিটি মেয়র আবুল খায়ের আবদুল্লাহ। তৃতীয়বারের মতো নবগ্রাম রোডে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুকের বাসা ভাংচুর ও আগুন দেওয়া হয়েছে। বরিশাল ক্লাবে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।
আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য শাহজাহান ওমর নগরের ব্রাউন কম্পাউন্ডে বীর উত্তম ভবন ভাংচুর ও লুটপাটের পর আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। শহরের বগুড়া রোডে আমির হোসেন আমুর বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। নগরীর সকল আওয়ামী লীগপন্থী ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের কার্যালয় এবং ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সৈয়দ আবিদের বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। এ ছাড়া বরিশাল সার্কিট হাউসসহ নগরীর সব স্থানে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভেঙে ফেলা হয়েছে। আন্দোলনকারীদের বাধায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা কোথাও যেতে পারেনি।
এসব ঘটনায় নগরীর কোতোয়ালি থানায় ফোন করা হলেও কেউ ফোনে সাড়া দেয়নি।