বাংলাদেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ নতুন কর্মসূচি পালন করবে বুধবার দুপুরে । বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আবদুল কাদের অনলাইন অ্যাপ টেলিগ্রামে এই ঘোষণা দেন। ‘সারা দেশে ছাত্র-জনতার ওপর গণহত্যা, গণগ্রেপ্তার, হামলা, মামলা, গুম–খুনের প্রতিবাদ সহ ৯ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে দুপুর সাড়ে ১২টায় এ কর্মসূচি পালন করা হবে ।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “সারা দেশে ছাত্র-জনতার ওপর চালানো গণহত্যা, গণগ্রেপ্তার, হামলা, মামলা, গুমের প্রতিবাদে এবং জাতিসংঘের তদন্তপূর্বক বিচারের দাবিতে ও ছাত্রসমাজের নয় দফা দাবি আদায়ে সকল আদালত, ক্যাম্পাস এবং রাজপথে আগামীকাল মার্চ ফর জাস্টিস কর্মসূচি পালন করা হবে।”
এর আগে ডিবি হেফাজতে থাকা অবস্থায় ভিডিও বার্তায় সব কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামসহ ছয় সমন্বয়ক।
এ ঘোষণা প্রত্যাখান করে বাইরে থাকা সমন্বয়ক ও সহ-সমন্বয়করা পরে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। তাদের অনুপস্থিতিতেই বিক্ষোভ সমাবেশ এবং চোখে-মুখে লাল কাপড় বেঁধে অনলাইনে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন আন্দোলনকারীরা।
আন্দোলন-সহিংসতার মধ্যেই গত ২১ জুলাই কোটা সংস্কার করে মেধাভিত্তিক ৯৩%, মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তানদের জন্য ৫%, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জন্য ১% ও শারীরিক প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য ১% শতাংশ নির্ধারণ করা হয়।
নতুন কর্মসূচি তুলে ধরে আন্দোলনকারীদের ‘অন্যতম সমন্বয়ক’ আব্দুল হান্নান মাসুদ অভিযোগ করেন, “আন্দোলন দমনের জন্য শাসকদের নির্দেশে সাধারণ ছাত্র ও আন্দোলনের সমন্বয় সহ নিরপরাধ মানুষকে যেভাবে গণগ্রেপ্তার চালানো হচ্ছে, সেটা রীতিমত দেশের সংবিধানবিরোধী ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন।
“বিগত কয়েকদিনে রাতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজ নেওয়া হয় কোনো শিক্ষার্থী আছে কিনা। থাকলে সঙ্গে সঙ্গে মোবাইল চেক ও গ্রেপ্তার করা হয়। ”
“১০ হাজারেরও অধিক নিরপরাধ মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিনা অপরাধে গ্রেপ্তার করে মোটা অংকের টাকা দিলেই ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। বিরল এক স্বাধীন দেশের নাগরিক। পৃথিবীতে এমন দেশ খুঁজে পাওয়া সত্যিই দুষ্কর।”
“গত কয়েকদিন ২ লাখের অধিক মানুষের নামে-বেনামে মামলা দেওয়া হয় ঢাকা শহরেই। শিক্ষার্থীদের হয়রানি, বিনা অপরাধে গ্রেপ্তার, গ্রেপ্তার বাণিজ্য ইত্যাদি এখন আমার স্বাধীন দেশের নৈমিত্তিক ঘটনা। নিজ দেশেই যেন পরবাসী আমজনতা।”
বিজ্ঞপ্তিতে অভিযোগ করা হয়, “ চার বিভাগীয় তদন্তের নামে প্রহসন ও আন্দোলনে সম্পৃক্ত শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ট্যাগ দিয়ে নির্যাতন, গুম, রিমান্ড যেন প্রতিদিনের ঘটনা।”