অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, বিতর্ক সৃষ্টি হয় এমন কোনো জায়গায় আমরা হাত দেব না। আমরা অন্তর্বর্তী সরকার, দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে নির্বাচন দিয়ে আমরা চলে যাব। রাজশাহী বিভাগীয় ইসলামী ফাউন্ডেশনে বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী সুধীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
জাতীয় সঙ্গীত পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ধর্ম উপদেষ্টা
বলেন, এগুলো বিতর্ক সৃষ্টির প্রয়াস। প্রধান উপদেষ্টাও বার বার বলেছেন, বিতর্ক সৃষ্টি হয় এমন কোনো জায়গায় আমরা হাত দেব না। আমরা হলাম অন্তর্বর্তী সরকার। আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে, ল অ্যান্ড অর্ডার সিচুয়েশনকে রিস্টোর করা। পলিটিক্যাল স্ট্যাবিলিটি এনসিওর করা।
তিনি আরও বলেন, আমাদের ইকোনমিতে ২ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার ফরেন এক্সচেঞ্জ এসেছে। আরও আসছে। এটাকে যদি আমরা আরও বাড়াতে পারি, একটা কনজিনিয়াল এটমোসফিয়ার (অনুকূল পরিবেশ) যদি তৈরি হয়, যখনই তৈরি হয়-আমরা নির্বাচন কমিশনকে ঢেলে সাজিয়ে একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত দলকে ক্ষমতা হস্তান্তর করে আমরা বিদায় নেব।
এ সময় ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে হামলা বিচ্ছিন্ন ঘটনা উল্লেখ করে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে দেশে যে বিজয় এসেছে, এরপরে বিদেশি মিডিয়াতে বলা হচ্ছে- এখানে সনাতন ধর্ম, বৌদ্ধ ধর্ম- এসব ধর্মের মানুষের ঘর-বাড়ি, ধর্মীয় উপাসনালয়ে হামলা হচ্ছে। হামলা যে একেবারে হয়নি সেটা বলব না। তবে সেটা একেবারে বিক্ষিপ্ত। এটা খুব বেশি গুরুত্ব রাখে না।
আসন্ন হজের প্যাকেজ মূল্য কমানোর পরিকল্পনা রয়েছে উল্লেখ করে এই ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, হজের সময় হাজিরা যে টাকা দেন, তার একটি পয়সাও আমরা ধর্ম মন্ত্রণালয়ে রাখি না। তাদের সঙ্গে আমরা ৮০ জন চিকিৎসক, আরও ২০-৩০ জন নার্স সঙ্গে রাখি। ফার্স্ট এইড চিকিৎসা দেই।
সৌদিতে চিকিৎসার ব্যবস্থা করি। এ খরচগুলো আমরা হাজিদের কাছ থেকে নিই না। হজের মূল যেটা খরচ-বিমান ভাড়া, সৌদি আরবে থাকা-খাওয়া এবং নিরাপত্তার জন্য সৌদি আরবকে একটা টাকা দিতে হয়। এ মাসেই সৌদি হজমন্ত্রীর সঙ্গে আমার দেখা হবে। আমি আপ্রাণ চেষ্টা করছি, তখন টাকা কমিয়ে জনগণের কাছে একটা গ্রহণযোগ্য প্যাকেজ ঘোষণা করতে চাই।
বাংলাদেশকে নিয়ে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সাম্প্রতিক বক্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশ-ভারতের সুসম্পর্ক বহাল রাখতে চাই। রাজনাথ মন্ত্রীর বক্তব্য আমরা শুনেছি। কিন্তু বাংলাদেশ একটি স্বাধীন রাষ্ট্র। স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি আছে। বাংলাদেশের ক্রিকেট দল ভারতে গেলে হামলা করবে, এ রকম খবরও মিডিয়াতে আসছে। এটা নিয়ে আমাদের ক্রিকেট বোর্ড আছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আছে- ওনারা এটা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে দেখবে; ব্যবস্থা নেবে।
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠা ও বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা সমাধানে করণীয় নিয়ে বিভিন্ন ধর্মের ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে এ সভার আয়োজন করা হয়। ইসলামিক ফাউন্ডেশন রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের মিলনায়তনে এ সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) শামীম আহমেদ।
এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আলমগীর রহমান, স্থানীয় সরকারের বিভাগের পরিচালক পারভেজ রায়হান ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বোর্ড অব গভর্নরসের গভর্নর মাওলানা জামাল উদ্দিন সন্দীপী। এছাড়া স্থানীয় আলেম ওলামা ও ধর্মীয় নেতারা এতে উপস্থিত ছিলেন।

previous post