ভারতের পালানোর সময় শুক্রবার রাত ১০টার দিকে সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার দনা সীমান্ত এলাকা থেকে সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক আটক করেছে বিজিবি।
বিচারপতি মানিককে আটকের পর একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। ওই ভিডিওতে দেখা যায়, সাবেক বিচারপতির গলায় গামছা বেঁধে হাত দিয়ে ধরে রেখেছেন একজন ব্যক্তি। আরেকজন তার নাম জিজ্ঞেস করছেন। এ সময় বিচারপতি মানিক তার পুরো নাম বলেন এবং বাড়ি মুন্সীগঞ্জ বলে জানান।
বিজিবি সদস্যরা তার পরিচয় জানতে চান। নিজের পরিচয় স্বীকার করে মানিক বলেন, ‘আমি বিচারপতি মানিক’।
দেশ ছেড়ে পালাচ্ছিলেন কেন, এমন প্রশ্নের জবাবে মানিক বলেন, ‘প্রশাসনের ভয়ে আমি দেশ ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করেছি’।
প্রচারিত টকশোতে উপস্থাপিকার সাথে মানিক ওদ্ধত্য ও কুরুচিপূর্ণ, নারী বিদ্বেষী, অপমানজনক বক্তব্য ও আচরণের কারন জানতে চাইলে মানিক বলেন, ‘এটার জন্য ক্ষমাও চেয়েছি’।
সঙ্গে কী আছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গতকাল আমার কাছে অনেক টাকা ছিল। আমাকে মেরে ৬০-৭০ লাখ টাকা নিয়ে গেছে দুজন ছেলে। এখন আমার সঙ্গে ব্রিটিশ পাসপোর্ট, বাংলা পাসপোর্ট আর কিছু টাকা আছে।ডেবিট কার্ড ও ক্রেডিট কার্ড আছে।’
আজ কত টাকা কাছে আছে জানতে চাইলে মানিক বলেন, ৪০ হাজার টাকা।
কত টাকা কন্টাক্টে আসছেন- প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি ১৫ হাজার টাকার কথা বলে সীমান্ত পার হতে চাচ্ছিলাম। পরে আমাকে দুই ছেলে ভারত সীমান্তে নিয়ে আমার সঙ্গে থাকা সব টাকা এবং মোবাইল নিয়ে যায়।
কোথায় আপনাকে মারধর করা হয়েছে, বর্ডারে নাকি ভেতরে- এমন প্রশ্নের জবাবে বিচারপতি মানিক বলেন, ইন্ডিয়ার ভেতরে। মারধরে অসুস্থ হয়ে পড়লে কলার পাতার ওপর শুইয়ে রেখে তারা পালিয়ে যায়।
এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক আপিল বিভাগের বিচারপতি ছিলেন। ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি অবসরে যান। এরপর বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও টেলিভিশন টক শোতে কথা বলতেন তিনি।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করায় মানিকের নামে গত সোমবার নোয়াখালীর আদালতে মামলা হয়েছে। কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট রবিউল হাসান পলাশ বাদী হয়ে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-১ নম্বর আমলি আদালতে মামলাটি করেন।
কোটা আন্দোলন ইস্যুতে সম্প্রতি একটি টেলিভিশন চ্যানেলে আয়োজিত টকশোতে আলোচক হিসেবে হিসেবে অংশ নেন সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। কিন্তু আলোচনার একপর্যায়ে মেজাজ হারিয়ে সঞ্চালক দীপ্তি চৌধুরীর ওপর ক্ষিপ্ত হন তিনি। পুরো অনুষ্ঠানে বেশ কয়েকবার উপস্থাপিকার ওপর নিজের ক্ষোভ ঝাড়েন এবং উচ্চবাচ্য করেন। শুধু তা-ই নয়, তিনি অনুষ্ঠান শেষে স্টুডিও ছাড়ার আগে উপস্থাপিকাকে ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলে আখ্যা দেন। ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।
পরে উপস্থাপিকা দীপ্তি চৌধুরীকে রাজাকারের বাচ্চা বলে সম্বোধন ও অশালীন আচরণের ঘটনায় ক্ষমা চেয়েছেন সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। একই সঙ্গে তিনি জনগণের কাছেও ক্ষমা প্রার্থনা করেন।