এক সপ্তাহের বেশি সময় বন্দুকযুদ্ধ, ড্রোন ও রকেট হামলার পর এবার ভারতের মণিপুর রাজ্যের তিনটি জেলায় কারফিউ জারি করেছে রাজ্য সরকার। পাশাপাশি গোটা রাজ্যের ইন্টারনেট পরিষেবাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
রাজ্য প্রশাসন জানিয়েছে, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পরিবর্তনের’ কারণে মঙ্গলবার সকাল ১১টা থেকে ইম্ফল পূর্ব ও পশ্চিম এবং থৌবাল জেলায় কারফিউ জারি করা হয়েছে।
মেইতেই ও কুকিদের মধ্যে ব্যাপক সহিংসতার জেরে আবার অশান্তি মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে ভারতের ‘সেভেন সিস্টার্স’ খ্যাত সাত রাজ্যের অন্যতম মণিপুরে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে জানায় , সাম্প্রতিক সহিংসতা ও বিক্ষোভে মণিপুরে ক্রমেই বাড়ছে হতাহতের ঘটনা। রাজ্যের রাজধানী ইম্ফাল ঘিরে হামলা-বিক্ষোভ ফিরছে।
গত বছরের মে থেকে মণিপুরের মেইতেই ও কুকি জনগোষ্ঠীর মধ্যে জাতিগত দাঙ্গায় ২০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত এবং হাজারো মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ে।
কুকি বিদ্রোহীরা বিষ্ণুপুর ও চূড়াচাঁদপুর সীমান্তের কিছু প্রান্তিক এলাকায় হামলা ও গুলি করে বলে মণিপুর রাজ্য সরকার দাবি করে। তাদের বিরুদ্ধে যৌথ বাহিনী ওই এলাকায় চিরুনি অভিযান চালায়। তারা বিদ্রোহীদের বেশ কয়েকটি বাঙ্কার ধ্বংস করেছে বলে জানায় রাজ্য সরকার।
যৌথ বাহিনীর অভিযানের পর মণিপুরের মইরাং শহরে রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় কুকি বিদ্রোহীরা, তাতে কয়েকজন নিহত হন।
শুক্রবার সন্ধ্যায় ইম্ফালের দ্বিতীয় ও সপ্তম মণিপুর রাইফেলস ক্যাম্প থেকে অস্ত্র লুট করার চেষ্টা করেছিল উত্তেজিত মেইতেইরা। তবে নিরাপত্তা বাহিনী ফাঁকা গুলি ও টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করলে তাতে তারা ব্যর্থ হয়।
অবশ্য তখন উত্তেজিত জনতার মধ্য থেকে গুলি ছোড়া হলে পুলিশের দুই সদস্য আহত হন। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ইম্ফাল উপত্যকার বিক্ষোভকারীরা সাংবাদিকদের বলেন, ড্রোন, রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঘটনায় তারা রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের ওপর হতাশ। তাই বেসামরিক নাগরিকদের আত্মরক্ষা করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।
সম্প্রতি রাজ্যের জিরিবাম জেলায় সহিংসতায় ছয়জনের মৃত্যু হয় বলে বলে মণিপুর পুলিশ তথ্য দেয়।
সন্দেহভাজন কুকি বিদ্রোহীরা ইম্ফাল থেকে ২২৯ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে জেলাটির নুংচাপ্পি গ্রামে হামলা চালায় বলে পুলিশের দাবি। সেখানে তারা ইউরেমবাম কুলেন্দ্র সিংহ (৬৩) নামের এক ব্যক্তিকে হত্যা করে।
মণিপুরের উপত্যাকাগুলিতে আধিপত্য বিস্তার করে থাকা মেইতেই সম্প্রদায়ের সশস্ত্র সদস্যদের সঙ্গে পাহাড়ি কুকি বিদ্রোহীদের বন্দুক লড়াইয়ে আরও পাঁচজন নিহত হন।

previous post
next post