ছাত্র আন্দোলনের পর বিজয়কে প্রশ্নবিদ্ধ করার অনেক অপচেষ্টা হচ্ছে। সাম্প্রদায়িক হামলা, মামলা বাণিজ্যসহ দেশজুড়ে চলছে ভয়াবহ আইনি সন্ত্রাসবাদ। দেশে বৈষম্যের কোনো স্থান নেই, হয়রানির কোনো সুযোগ নেই বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রংপুরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কারীরা।
যারা এসব অপকর্মের সঙ্গে জড়িত, তারা ভালো না হলে তাদের মুখোশ খুলে দেওয়ার পাশাপাশি কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তারা।
রংপুর আদালত চত্বরে হত্যা মামলায় নিরাপরাধ মানুষকে যুক্ত করার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলনে এ হুঁশিয়ারি দেন সমন্বয়করা।
সমন্বয়করা বলেন, বর্তমান মামলাগুলোতে যে সব নিরাপরাধ ব্যক্তিকে যুক্ত করা হচ্ছে, মূলত দুটি কারণে তাদের যুক্ত করা হচ্ছে। একটি হলো ব্যক্তিগত শত্রুতা-আক্রোশ ও স্বার্থ। বর্তমানে হত্যা মামলাগুলোতে ৩০০-৪০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। আমরা নথিগুলো চেক করে দেখেছি, অধিকাংশ মানুষেরই এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে কোনো সংশ্লিষ্টতা ছিল না।
অটোচালক মানিক মিয়া হত্যা মামলার উদাহারণ টেনে তারা বলেন, সেই হত্যা মামলায় ১১৯ জনকে আসামি করা হয়েছে, যার মধ্যে ১০০ জনই নিরাপরাধ। ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট আদালতের বিচারকের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে, যাতে করে ওই মামলাটি সিআরও থেকে জিআরও-তে না যায়। সেই সঙ্গে বাদীর সঙ্গে কথা বলে এফিডেভিটের মাধ্যমে যারা নিরাপরাধ তাদের জামিনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সমন্বয়করা আরও বলেন, মামলায় এমন কিছু মানুষ আসামি হয়েছে, যারা চায়ের দোকান করে, বিভিন্ন পেশার সঙ্গে জড়িত, বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত শিক্ষক। অথচ তারা এসবে অভিযুক্ত নয়। এসব বিষয়ে সমাধানের জন্য মেট্রোপলিটন চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও মেট্রোপলিটন পুলিশের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। যাতে করে কোনো নিরাপরাধ মামলার আসামি না হয়, হয়রানির শিকার না হয়।
সমন্বয়করা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যারা এসব আইন সন্ত্রাসবাদ করছেন, আপনারা ভালো হয়ে যান, যাতে করে তৃতীয় কোনো সংবাদ সম্মেলন করে মুখোস উন্মোচন করতে না হয়। আপনাদের নাম উল্লেখ করে আপনাদের বিরুদ্ধে যাতে কিছু করতে না হয়। এরপরও কেউ এসবে জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ সময় তারা বলেন, যারা মামলা করতে চান, আপনারা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের পক্ষে যে ৮ সদস্য বিশিষ্ট প্যানেল আইনজীবী রয়েছে, তাদের মাধ্যমে মামলা করবেন। কোনোভাবেই মামলা করতে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ কিংবা প্ররোচিত হবেন না। প্রয়োজনে আপনাদের বিনামূল্যে আইনি সহায়তা দেওয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনের সমন্বয়কারীরা নির্দোষ হওয়া সত্ত্বেও মামলায় জড়িত বা জড়িত সন্দেহে মাহিগঞ্জ-হারাগাছ, কোতয়ালী-তাজহাট ও হাজিরহাট-পশুরাম নামে তিনটি জোনে আইনি সহায়তা নেওয়ার অনুরোধ জানান সমন্বয়করা।