হিজবুল্লাহর সঙ্গে পাল্টাপাল্টি হামলার পর দক্ষিণ লেবানন সীমান্তের পরিস্থিতি এখনও পুরোপরি স্থিতিশীল নয় বলে জানিয়েছে ইসরায়েল। যদিও দেশটি হিজবুল্লাহর হামলা সফলভাবে প্রতিহত করেছে বলে সোমবার এক বিবৃতিতে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে।
গত জুলাইতে লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত হন হিজবুল্লাহ কমান্ডার ফুয়াদ শোকর। এর প্রতিশোধ নিতে হিজবুল্লাহ ইসরায়েলে হামলা প্রস্তুতি নেয়। এ খবর জানার পর রোববার ইসরায়েল হিজবুল্লার বেশ কয়েকটি ঘাঁটিতে হামলা করে। হিজবুল্লাহও ইসয়ায়েলি সেনাদের ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালায়। যদিও ইসরায়েল দাবি করেছে, হিজবুল্লাহর হামলা সফলভাবে প্রতিহত করা হয়েছে।
ইসরায়েলি সরকারের মুখপাত্র ডেভিড মেনসার এক বিবৃতিতে জানান, ইসরায়েলি হামলায় হিজবুল্লাহ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে এর একটি দীর্ঘস্থায়ী সমাধান প্রয়োজন।
ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চল থেকে কয়েক হাজার নাগরিককে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতি টেকসই নয়। ইসরায়েল তার দায়িত্ব পালন করবে এবং তার দেশের নাগরিকদের সার্বভৌম ভূখণ্ডে ফিরিয়ে দেবে।’
মেনসার জানান, শিশুরা আগামী সেপ্টেম্বর থেকে তাদের স্কুলে ফিরতে পারবে বলে আশা করা হচ্ছে। যেসকল ইসরায়েলি বাসিন্দাকে বাড়িঘর থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল তাদের আর্থিক সহায়তার মেয়াদ ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। ইসরায়েল যে পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি আশঙ্কা করেছিল তা হয়নি। গাজায় যুদ্ধ বন্ধ ও জিম্মিদের ফিরিয়ে আনাতে আলোচনা সহায়তা করতে পারে।
এদিকে, ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাস বলেছে যে, মিসর সীমান্তে গাজা উপত্যকার দক্ষিণ অঞ্চলের ইসরায়েলি সেনাদের অবস্থান তারা মেনে নেবে না। এ ধরনের কোনো চুক্তিতে তারা রাজি হবে না। তবে বিশ্লেষকদের দাবি, সংঘাতকে গাজার বাইরে ঠেলে দেওয়ার জন্য চেষ্টা হচ্ছে। রোববাবের ইসরায়েল-হিজবুল্লাহ পাল্টাপাল্টি হামলা তাই প্রমাণ করে।
ইসরায়েলের সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া দৈনিক ইয়েদিওথ আহরোনোতে আভি ইসাচারফ নামে এক বিশ্লেষক লিখেন, ‘হিজবুল্লার হামলা ব্যর্থ করার পর হামাসের জিম্মি মুক্তি নিয়ে আলোচনার পথ প্রশস্ত হতে পারে। এতে পুরো মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে পারে।’
প্রায় ১০০টি ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান দক্ষিণ লেবাননে হিজবুল্লাহ বেশ কয়েকটি ঘাঁটিতে আঘাত করে। ইসরায়েলি সেনাদের দাবি, তারা হিজবুল্লাহর ছোড়া শত শত ক্ষেপণাস্ত্র ও রকেট প্রতিহত করেছে। যদিও হিজবুল্লাহ ইসরায়েলের এই দাবি অস্বীকার করে বলেছে যে, তাদের হামলা সফল হয়েছে।
গত মাসে তেহরানে হামাসের রাজনৈতিক নেতা ইসমাইল হানিয়াহকে হত্যার জন্য ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ইরান। যদিও ইরান এখন বলছে, তারা আঞ্চলিক উত্তেজনা বাড়াতে চাইছে না।
গত বছরের অক্টোবরে গাজা যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই হিজবুল্লাহর সঙ্গে সংঘর্ষ হচ্ছে ইসরায়েলের। এ যুদ্ধে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসকে সমর্থন দিয়েছে ইরানপন্থী হিজবুল্লাহ। গত জুলাইতে লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত হন হিজবুল্লাহ কমান্ডার ফুয়াদ শোকর। ফুয়াদ শোকরের হত্যাকাণ্ডের পর ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে মরিয়া হয়ে ওঠে হিজবুল্লাহ।
previous post