ছাত্র-জনতার আন্দোলন ঘিরে ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত যেসব হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, সেগুলোর জন্য নির্দেশদাতা হিসেবে সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হতে পারে বলে অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল জানিয়েছেন। বুধবার সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আসিফ নজরুল এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, গণহত্যা ও গুলিবর্ষণের এসব ঘটনায় কিছু মামলা হয়েছে। রাজপথে থাকা বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন, মানবাধিকার সংগঠন, জনগণের বিভিন্ন গোষ্ঠী প্রশ্ন করেছে, এটাকে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে বিচার করার সুযোগ আছে কি না। তাঁরা খতিয়ে দেখেছেন, এই আইনের অধীন এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা, যাঁরা আদেশ দিয়েছেন, বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছেন, তাঁদের সবাইকে বিচারের আওতায় আনা সম্ভব।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়তি ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনতে ২০১০ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার।
এই ট্রাইব্যুনালে শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন যুদ্ধাপরাধীর বিচার শেষে শাস্তি কার্যকর হয়েছে।
ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে সব মামলা ৩১ আগস্টের মধ্যে প্রত্যাহার : গত ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্টের আন্দোলন ও গণ-অভ্যুত্থানে সারা দেশে ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে যেসব মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা দায়ের হয়েছে, তার সবই প্রত্যাহার করা হবে বলে জানান আইন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, আশা করছি, আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে ঢাকার সব মামলা এবং ৩১ আগস্টের মধ্যে সারা দেশের ওই মামলা প্রত্যাহার করা হবে।
ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলন দমনে যেসব ‘গণহত্যা ও গুলিবর্ষণ’ হয়েছে, তার বিচারের তদন্ত জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে করার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান আসিফ নজরুল।
ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক করার সিদ্ধান্ত হয়েছে উল্লেখ করেন আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা তাঁর কাছে সহযোগিতা চাইব। এ ছাড়া জাতিসংঘের উচ্চ পর্যায়ের বিভিন্ন কনসার্ন এজেন্সির সঙ্গেও যোগাযোগ করা হবে। আশা করছি, শিগগিরই এটা শুরু করতে পারব।
বিগত সময়ে যারা বিদেশে অর্থ পাচার করেছে, তাদের বিচার প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যারা জনগণের টাকা পাচার করেছে, দুর্নীতি করেছে, তাদের বিচার করা হবে।’
সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম ও রাজনৈতিক নেতা মাহমুদুর রহমান মান্নার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়ার উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, রোজিনা ইসলামের পাসপোর্ট এরই মধ্যে ফেরত দেওয়া হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে করা মামলা আগামীকালের (আজ) মধ্যে প্রত্যাহারের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ রকম আরো অনেক মামলা প্রত্যাহারের আশ্বাস দেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসে সম্পূর্ণ দলীয় ভিত্তিতে নিয়োগ হয়েছিল। তার মধ্যে প্রায় অর্ধেকের মতো কর্মকর্তা পদত্যাগ করেছেন। সেখানে আমরা বেশ কিছু নতুন কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছি।’
previous post