গত কয়েক মাসে ইউক্রেনজুড়ে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী। এবারও তার ব্যাতীক্রম নয়, ইউক্রেনের সবচেয়ে বড় চিকিৎসা কেন্দ্র ওহমাটডিট চিলড্রেনস হাসপাতালেসহ বেশ কয়েকটি স্থাপনায় হামলা চালায় রুশ বাহিনী। এতে কমপক্ষে ৪১ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ১৬৬ জন।
দিনের বেলা ইউক্রেনে রাশিয়ার এই ধরনের হামলা বেশ বিরল এবং এই হামলার পর বাবা-মায়েরা শিশুকে ধরে হাসপাতালের বাইরে রাস্তায় হাঁটছিলেন, তাদের অনেকে হতবাক হয়ে পড়েছিলেন এবং কাঁদছিলেন। হামলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
প্রাথমিকভাবে হামলার পর ধ্বংসস্তূপের মধ্য থেকে আটকে পড়াদের উদ্ধারে এগিয়ে আসেন হাসপাতালটির চিকিৎসক, নার্সসহ অন্যান্য কর্মীরা। পরে যোগ দেন স্থানীয় পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবকরা। সরিয়ে নেয়া হয় অন্য শিশুদের।
অন্যদিকে রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় বেলগোরদ অঞ্চলের গভর্নর বলেছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ইউক্রেনের হামলায় চারজন নিহত হয়েছে। সেইসঙ্গে রাশিয়া দাবি করেছে, তারা ইউক্রেনের হাসপাতালে হামলা চালায়নি। তবে ইউক্রেন বলছে, তারা রাশিয়ান ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের অবশিষ্ট পেয়েছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ন্যাটো শীর্ষ সমম্মেলেনর জন্য ওয়াশিংটনে যাওয়ার আগে পোল্যান্ডে যাত্রা বিরতি করেন। সেখানে সোমবার তিনি বলেন, রাশিয়ার এই হামলায় ৩৭ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন দেড় শতাধিক।
টেলিগ্রাম মেসেজিং অ্যাপে লেখা এক বার্তায় জেলেনস্কি বলেন, হামলায় শিশুদের হাসপাতাল এবং কিয়েভের একটি মাতৃত্ব কেন্দ্র, শিশুদের নার্সারি এবং ব্যবসায়িক কেন্দ্র ও বাড়িসহ ১০০ টিরও বেশি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সোমবার রাশিয়া ইউক্রেনের মাটিতে ৪০টির বেশি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে বলে দাবি করেছেন জেলেনস্কি। তিনি বলেছেন রাশিয়া এবার কিয়েভ, ডিনিগ্রো, ক্রিভি রিহ, স্লোভিয়ানস্ক এবং ক্রামতোর্স্কের শতাধিক ভবনকে হামলার লক্ষ্যবস্তু করেছে।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের ঘোষণা দেন ভ্লাদিমির পুতিন। এরপর মঙ্গলবার (৮ জুলাই) পর্যন্ত টানা ৮৬৫ দিনের মতো চলছে দেশ দুইটির সংঘাত। এতে দুই পক্ষের বহু হতাহতের খবর পাওয়া যাচ্ছে। তবে যুদ্ধ বন্ধে এখন পর্যন্ত কোনো লক্ষণ নেই।
রাশিয়ান এমন ভয়াবহ হামলার মঙ্গলবার ইউক্রেনে শোক দিবস ঘোষণা করেছে দেশটির সরকার। দেশটি বলছে, ইউক্রেনের পশ্চিমা মিত্রদের কাছ থেকে জরুরিভাবে তাদের বিমান প্রতিরক্ষার আপগ্রেড প্রয়োজন।

previous post