৫ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সাভার আশুলিয়ায় পুলিশের হাতে আটক হন আহত শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনতা। তাদেরকে গাড়িতে উঠানো হয় থানায় নিয়ে যাওয়ার জন্য।
এরপর সমস্ত নৃশংসতাকে হার মানিয়ে বীভৎস তাণ্ডবে মেতে ওঠে পুলিশ, আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় গাড়িতে। পুড়ে ছাই হয়ে যায় গাড়িতে থাকা সবাই।

তাদের মধ্যে একজন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর জেলার বেতঘর গ্রামের শফিকুল ইসলামের একমাত্র ছেলে তানজীল মাহমুদ সুজয়। সুজনের সাথে ঘটে যাওয়া এমনই বর্ণনা দেন সুজনের পরিবার ও পরিচিতরা।
সজন ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ননায় জানা যায়, ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মুখে যখন শেখ হাসিনা পালিয়ে দেশ ত্যাগ করেন, তখন কোটি জনতা মেতে ওঠে আনন্দে।
কিন্ত সাভার আশুলিয়ায় তখন চলছিল পুলিশের বিভৎস তান্ডব নৃত্য। নির্বিচারে হত্যা করা হয় আন্দোলনকারীদের অনেক কে। সুজয় সহ পুলিশের গুলিতে আহত ১১ জনকে।
থানার ভিতর নিয়ে পুলিশের পিকআপ ভ্যানে রাখা হয়। পরে পিকআপ ভ্যানে আগুন দিয়ে থানা থেকে পালিয়ে যায় পুলিশ সদস্যরা।

সুজয়ের বাবা জানান বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে প্রতিদিনই যোগ দিতে সুজয়। ছেলের সাথে ফোনে শেষ কথা হয় মিছিলে থাকা অবস্থায়। ৫ আগস্ট বেলা তিনটার পর ছেলেকে ফোনে না পেয়ে হাসপাতাল সহ সম্ভব সব জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেন তারা।
কিন্তু ওইদিন ছেলের সন্ধান পাননি বাবা। পরদিন অগ্নিদগ্ধ থানার পিকআপে লাশের স্তুপে সনাক্ত হয় ছেলের মরদেহ।

সুজয়ের মৃত্যুতে শোকে ছায়া নেমে আসে তার স্কুল ‘ভাওয়াল বদলে আলম সরকারি কলেজের’ সহপাঠীসহ, শিক্ষক, শিক্ষার্থী সবার মাঝে।

শেখ হাসিনা পদত্যাগের একদিন আগে ফেসবুকে একটি প্রতিবাদী পোস্ট দেয় সুজয়। পোস্টে সুজয় স্বৈরশাসককে উদ্দেশ করে লিখেন- ‘আমি বেঁচে থাকলে বীর, মরলে শহিদ। তুই বাঁচলে টোকাই মরলে আলহামদুলিল্লাহ। হিসাবটা মিলা’।