গণঅভ্যুত্থানের মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর তাঁর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ব্যক্তিদের ওপর খড়গ নেমে এসেছে। বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার করা হচ্ছে তাদের। এবার এক রাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে চারজনকে, তারা সবাই আওয়ামী লীগ সরকারের প্রভাবশালী হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
ওই চারজনের মধ্যে রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা, সাবেক মুখ্য সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী। রয়েছেন এক্সিম ব্যাংক ও বিএবির সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার, সাবেক যুব ও ক্রীড়া সচিব মেজবাহ উদ্দীন আহমেদ এবং বসুন্ধরা গ্রুপের কো-অর্ডিনেটর আদনান।
গোয়েন্দা পুলিশ মঙ্গলবার (১ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান। তিনি বলেন, গ্রেপ্তার প্রত্যেকের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট মামলা রয়েছে।
এই চার জনের মধ্যে কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী কবি কামাল চৌধুরী হিসেবে পরিচিত। আওয়ামী লীগের টানা চতুর্থ মেয়াদের সরকারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টার দায়িত্ব দিয়েছিলেন।
সরকারি চাকরি থেকে অবসরে যাওয়ার আগে কামাল চৌধুরী ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুখ্য সচিব। বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উদযাপন জাতীয় কমিটির প্রধান সমন্বয়ক হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেন।
গত ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে শেখ হাসিনার বিশ্বস্ত এই সহযোগীকে আর প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছিল না। তথন থেকে আত্মগোপনে ছিলেন নাসা গ্রুপের উদ্যোক্তা নজরুল ইসলাম মজুমদারও, যিনি শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত।
এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে নজরুল ইসলাম মজুমদার ২০০৮ সালের জানুয়ারি থেকে একটানা ১৭ বছর বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের চেয়ারম্যান ছিলেন। সরকারের পতনের পর এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদ থেকে নজরুল ইসলাম মজুমদারকে সরিয়ে পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপর বিএবির দায়িত্ব থেকেও তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
নজরুল ইসলাম মজুমদারের পাশাপাশি তার স্ত্রী নাছরিন ইসলাম এবং ছেলে-মেয়েদের ব্যাংক হিসাব ইতোমধ্যে অবরুদ্ধ করা হয়েছে।
