আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গুমের ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিশন ‘আয়নাঘরের’ প্রমাণ পেয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) গুলশানে বলপূর্বক গুম সংক্রান্ত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তদন্ত কমিশনের চেয়ারম্যান ও অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী এ তথ্য জানান।
তদন্ত কমিশনের চেয়ারম্যান ও অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী জানান, কমিশন ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স (ডিজিএফআই) ভবনে গিয়ে দোতলা ভবনটিতে ২২টি সেল খুঁজে পায়, যেগুলো কাউকে বন্দী রাখার জন্য ব্যবহৃত হতো।
মইনুল ইসলাম জানান, কমিশন কাজ শুরুর পর গত ১৩ কার্যদিবসে তাদের কাছে মোট ৪০০টি অভিযোগ জমা পড়েছে। তবে, নষ্ট করা হয়েছে অনেক আলামত।
কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, ‘যারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে জোরপূর্বক গুমের শিকার হয়েছেন, তাদের অভিযোগ আমরা আমলে নিয়েছি। আমরা অভিযুক্তদের তলব করব। তারা কমিশনে হাজির না হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’
বেশির ভাগ অভিযোগই র্যাব , পুলিশের গোয়েন্দা শাখা, ডিজিএফআই ও কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) বিরুদ্ধে উল্লেখ করে মইনুল ইসলাম বলেন, আমরা ২৫ সেপ্টেম্বর আয়নাঘর এবং ১ অক্টোবর ডিবি ও সিটিটিসি প্রাঙ্গন পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। আমরা সেখানে কোনো বন্দী খুঁজে পাইনি। কারণ, আমাদের মনে হয় বন্দীদের সবাইকে গত ৫ আগস্টের পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
গত ২৭ আগস্ট হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিশন গঠন করে সরকার। ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের ৫ আগস্ট পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে জোরপূর্বক গুম হওয়া ব্যক্তির সন্ধানে এ কমিশন করা হয়।
আয়নাঘরের বিভিন্ন আলামত নষ্ট করা হয়েছে জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে গুম কমিশনের সদস্য সাজ্জাদ হোসেন বলেন, সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ এভিডেন্স তারা নষ্ট করে দিয়েছে ওয়ালে পেইন্ট করে। ভিক্টিমরা বলেছিল ওয়ালে তাদের অনেক কথা, নাম এগুলো লেখা ছিল। অনেকের ফোন নম্বর, অনেকের ঠিকানা লেখা ছিল।
ওই জিনিসগুলো পেইন্ট হওয়ার কারণে সেটা আর ওখানে পাওয়া যায়নি। গত ৫ অগাস্ট যখন রেজিম চেইঞ্জ হল, তার পরপরই এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
previous post
next post