ইন্টারন্যাশনাল লংশোরম্যানস অ্যাসোসিয়েশন (ILA) ইউনিয়নের ডাকা ধর্মঘটে মেইন থেকে টেক্সাস পর্যন্ত বিস্তীর্ণ অঞ্চলের অন্তত ৩৪টি বন্দর কার্যত স্থবির হয়ে গেছে। আইএলএর প্রায় ৪৫ হাজার সদস্য এই ধর্মঘটে অংশ নিচ্ছেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে দুই পক্ষকেই সংকটের সমাধানের আহ্বান জানান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন চলমান সংকট নিরসনে দুই পক্ষকে অবিলম্বে আলোচনায় বসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার আহ্বান জানিয়েছেন। নর্থ ক্যারোলাইনা যাওয়ার আগে মেরিল্যান্ডের বিমান ঘাঁটি জয়েন্ট বেইজ অ্যান্ড্রুজে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই আহ্বান জানান।
এছাড়া, প্রেসিডেন্ট বাইডেন উল্লেখ করেছেন যে, করোনা মহামারির পর বন্দরগুলো অন্তত ৮০০ শতাংশ লাভ করেছে, এবং এই লাভের একটি অংশ শ্রমিকদেরও প্রাপ্য। তিনি শ্রমিকদের অধিকারকে গুরুত্ব দিয়ে তাদের ন্যায্য হিস্যা পাওয়ার ওপর জোর দেন।
বাইডেনের মতো শ্রমিকদের পক্ষ নিয়ে কথা বলেছেন, ট্রান্সপোর্টেশন সেক্রেটারি পিট বুটিজাজ।
পিট বুটিজাজ বলেন, গত কয়েক বছর বন্দরগুলো যে রেকর্ড পরিমাণ আয় করেছে, শ্রমিকরা তা থেকে, তাদের ন্যায্য অংশ দাবি করছে। এবিসি নিউযকে দেয়া সাক্ষাৎকারে, সেক্রেটারি বুটিজাজ আরো বলেছেন, মনে রাখা জরুরি যে এই শ্রমিকেরাই মহামারির সময় নিজদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বন্দরগুলোকে সচল রেখেছিলেন এবং তাদের অনেকে প্রাণ হারিয়েছেন।
রপ্তানি বন্ধ থাকায় ধর্মঘটের ২৪ ঘণ্টা পার হওয়ার আগেই ইস্ট ও গালফ কোস্টের অন্তত ৩৪টি বন্দরে ৩৮টি পণ্যবাহী জাহাজ আটকা পড়েছে। বিশ্লেষকেরা বলেন, এই ধর্মঘটের ফলে প্রতিদিন দেশের অর্থনীতি গড়ে পাঁচ বিলিয়ন ডলার ক্ষতির সম্মুখীন হবে। এরই মধ্যে ধর্মঘটের শিকার বন্দরগুলো দিয়ে সব ধরনের পণ্য আমদানি বন্ধ রয়েছে।
নতুন চুক্তির আলোচনায় ইউএসএমএক্স (United States Maritime Alliance) শ্রমিকদের মজুরি ৫০ শতাংশ বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়েছে। আইএলএ’র দাবি, চুক্তির মেয়াদকালে প্রতি বছর শ্রমিকদের ঘণ্টাপ্রতি মজুরি ৫ ডলার করে বাড়াতে হবে। এছাড়া, তারা বন্দরে শ্রমিকদের চাকরির নিরাপত্তা রক্ষার্থে যন্ত্রের ব্যবহার সীমিত করারও আহ্বান জানিয়েছে।
এই ধর্মঘটের ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে দুশ্চিন্তা দেখা দিলেও, বাজার বিশেষজ্ঞরা বলেন ভিন্ন কথা। টেম্পল ইউনিভার্সিটি ফক্স স্কুল অফ বিজনেসের স্ট্যাটিসক্সের প্রফেসর সুবোধ কুমার বলছেন, ধর্মঘটের প্রভাব এখনই বাজারে পড়বে না। তাই ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই।

previous post