আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে গণপিটুনিতে মোট ৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আসকের মতে, এই দুই মাসে গণপিটুনির ঘটনা জানুয়ারি থেকে জুলাই মাসের তুলনায় বেড়ে গেছে। মানবাধিকার সংগঠনটি উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যে গণপিটুনির এই প্রবণতা ক্রমবর্ধমান এবং এটি সামাজিক ন্যায়বিচারের জন্য একটি গুরুতর হুমকি।
জার্মানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলের এক প্রতিবেদনে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) তথ্যের ভিত্তিতে জানানো হয়, চলতি বছরের আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে গণপিটুনির ঘটনায় ৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই প্রতিবেদনে আইনজীবী মনজিল মোরসেদের বরাত দিয়ে বলা হয়, বিচারিক প্রক্রিয়া ছাড়া যেকোনো হত্যাই বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড।
যদিও নবনিযুক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান গত ২১ সেপ্টেম্বর ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে দাবি করেন, ‘৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে দেশে কেউ বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়নি।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন এলাকায় গণপিটুনিতে ৮১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে গণপিটুনির ঘটনা সবচেয়ে বেশি ছিল। আগস্টে ২১ জন এবং সেপ্টেম্বরে ২৮ জনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে, যা মোট ৪৯ জন। আগের সাত মাসে (জানুয়ারি থেকে জুলাই) পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে ৩২ জনকে।
মানবাধিকার কর্মী এবং আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সাবেক নির্বাহী পরিচালক নূর খান বলেন, ‘অস্থিতিশীল একটা পরিস্থিতি ছিল। তবে এসব থেকে আমরা এখনও পরিত্রাণ পাইনি। এসব ঘটনা সরকারকে শক্ত হাতে দমন করতে হবে। এই ঘটনা যেন বারবার না ঘটে সেজন্য এখনকার সরকারকেই নজির সৃষ্টি করতে হবে।’
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ মতে, ‘এখন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড মব জাস্টিস হচ্ছে। এই ধরনের ঘটনা আরও ঘটবে, যদি এই পরিস্থিতিকে স্ট্রংলি হ্যান্ডেল করা না হয়। আইনশৃঙ্খলাসহ সব ক্ষেত্রেই যে একটি অস্থির পরিস্থিতি চলছে, বিচারাঙ্গনেও অস্থিরতা আছে। এগুলো স্বাভাবিক করতে হবে।’
নূর খান বলেন, ‘এখন পর্যন্ত যে ঘটনাগুলো ঘটেছে সেগুলোর ব্যাপারে বড় কোনো পদক্ষেপ আমরা নিতে দেখিনি। ফলে মব জাস্টিস উৎসাহিত হচ্ছে। যদি কাঠোর ব্যবস্থা নেয়া হতো, তাহলে এগুলো ঘটতো না।’
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিষ্ক্রিয় থাকার সুযোগ নিয়ে দুষ্কৃতিকারীরা দেশকে অস্থিতিশীল করে তুলছে বলেও দাবি করেন নূর খান।

previous post