কক্সবাজারের টেকনাফে অভিযান চালিয়ে বিক্রি নিষিদ্ধ তিমি মাছের বমি বা অ্যাম্বারগ্রিসসহ এক ব্যক্তিকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। রোববার (৬ অক্টোবর) বিকেলে উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীরদ্বীপ এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়।
আটক শামশুল আলম (৩৫) উপজেলার সেন্টমার্টিন দ্বীপের বাসিন্দা। বিজিবির টেকনাফ ২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
বিজিবি জানায়, বিক্রি নিষিদ্ধ তিমি মাছের বমি বা অ্যাম্বারগ্রিস থেকে বিভিন্ন মূল্যবান পারফিউম ও ওষুধ তৈরি করা হয়। বাংলাদেশে এ ধরনের মূল্যবান ও দুষ্প্রাপ্য জিনিসের চোরাচালান বিরল ঘটনা।
লেফটেনেন্ট কর্নেল মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপ বাজার পাড়া সীমান্ত দিয়ে সংঘবদ্ধ চোরাকারবারিরা মালামাল পাচার করার খবরে বিজিবির একটি দল অভিযান চালায়। এতে সন্দেহজনক এক ব্যক্তি বস্তা কাঁধে করে বাজার পাড়ার দিকে আসতে দেখে বিজিবির সদস্যরা থামার নির্দেশ দেয়। বিজিবির সদস্যদের উপস্থিতি টের পেয়ে বস্তাটি ফেলে ওই ব্যক্তি পালানোর চেষ্টা করে। এ সময় ধাওয়া দিয়ে তাকে আটক করা হয়।
পরে বস্তা খুলে বিক্রি নিষিদ্ধ আট কেজি ৩৯৮ গ্রাম অ্যান্বারগ্রিস বা তিমি মাছের বমি উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার করা এসব অ্যাম্বারগ্রিসের আনুমানিক বাজারমূল্য ২০ কোটি ৯৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
বিজিবির এই কর্মকর্তা বলেন, উদ্ধার করা অ্যাম্বারগ্রিসগুলো সোমবার সকালে রামুর বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বোরি) পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়। সেখানে অ্যাম্বারগ্রিসের বৈশিষ্ট্য এবং শনাক্ত সম্পন্ন করা হয়। পরে অ্যাম্বারগ্রিসগুলো জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ট্রেজারি শাখায় জমা দেওয়া হয়েছে এবং আটক ব্যক্তির বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে টেকনাফ থানায় মামলা হয়েছে।
তিমির বমির এত দাম কেন? এতে কী এমন থাকে? বা তিমির বমি বা অ্যাম্বারগ্রিস কী কাজে লাগে যে তার মূল্য কোটি কোটি টাকা?
অ্যামেরিকান ওশান ওয়েবসাইট থেকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, মূলত, সুগন্ধি আর ওষুধ তৈরিতে ব্যবহৃত হয় অ্যাম্বারগ্রিস। বিশ্বের দামি দামি সুগন্ধির সতেজতার নেপথ্যে রয়েছে এটি। দুষ্প্রাপ্য পদার্থটি সুগন্ধির সুবাস বৃদ্ধি করে এবং সংরক্ষণ করে। সুগন্ধিতে ব্যাপক চাহিদার পাশাপাশি বিভিন্ন ওষুধ তৈরিতেও এই অ্যাম্বারগ্রিস কার্যকরী। প্রচলিত চীনা ওষুধে ব্যবহৃত এটি। যে কারণে বিশ্ববাজারে এর কদর বা চাহিদা আকাশচুম্বী।