গ্রেপ্তারের পর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী ও সুনামগঞ্জ-৩ আসনের (শান্তিগঞ্জ ও জগন্নাথপুর) সাবেক সংসদ সদস্য এম এ মান্নান। অবশেষে জামিন পেলেন তিনি। সুনামগঞ্জের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. হেমায়েত উদ্দিন বুধবার (৯ অক্টোবর) দুপুরে শুনানি শেষে তাঁর জামিন মঞ্জুর করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তাঁর পক্ষে আদালতে শুনানিতে অংশ নেওয়া জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আবদুল হামিদ।
এর আগে বেলা ১১টার দিকে একই আদালতে এম এ মান্নানের জামিন শুনানির সময় আইনজীবীদের দুই পক্ষের মধ্যে হট্টগোল হয়। এর একপর্যায়ে বিচারক এজলাস থেকে নেমে যান। পরে দুপুর আবার জামিন শুনানি শুরু হয়। শুনানি শেষে বেলা আড়াইটার দিকে বিচারক তাঁর জামিন মঞ্জুর করেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সুনামগঞ্জ জেলা শহরে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার অভিযোগে করা মামলায় গত ২০ সেপ্টেম্বর রাত ১০টার দিকে এম এ মান্নানকে শান্তিগঞ্জের হিজলবাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গত শনিবার তিনি সুনামগঞ্জ জেলা কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়েন। প্রথমে তাঁকে জেলা সদর হাসাপাতালে এবং পরে সিলেট কেন্দ্রীয় কারা হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে গতকাল মঙ্গলবার সকালে তাঁকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
এম এ মান্নানকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ ও মুক্তির দাবিতে শান্তিগঞ্জে সুনামগঞ্জ-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ, বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা। তবে তাঁর শাস্তির দাবিতে শান্তিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ শহরে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মীরা একাধিবার বিক্ষোভ করেছেন।
সুনামগঞ্জ পৌর শহরে ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা হয়। এ ঘটনায় আহত শিক্ষার্থী জহুর আহমদের ভাই হাফিজ আহমদ বাদী হয়ে ২ সেপ্টেম্বর সদর মডেল থানায় দ্রুত বিচার আইনে একটি মামলা করেন। এ মামলায় এম এ মন্নানসহ ৯৯ জনকে আসামি করা হয়। মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি আছেন আরও ১৫০ থেকে ২০০ জন। তবে এখন পর্যন্ত এম এম মান্নান ছাড়া এই মামলার এজাহারনামীয় আর কোনো আসামিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
যুগ্ম সচিব হিসেবে চাকরিজীবন শেষ করে এম এ মান্নান আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যোগ দেন। সুনামগঞ্জ-৩ আসন থেকে ২০০৮ সাল থেকে টানা চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকারের অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর সরকারের পরিকল্পনামন্ত্রীর দায়িত্ব পান। সবশেষ সংসদ নির্বাচনে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেও তাঁকে মন্ত্রী করা হয়নি।
previous post