ফ্লোরিডায় হারিকেন মিল্টনের আঘাতে সৃষ্ট টর্নেডোতে পাঁচজনের মৃত্যু এবং ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেএছে। ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে এবং বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছেন ৩০ লাখেরও বেশি মানুষ।
পাওয়ারআউটেজ ডট ইউএসের তথ্য অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হারডি কাউন্টি, পাশাপাশি সারাসোটা, মানাটি, এবং লুচি কাউন্টিতেও পরিস্থিতি গুরুতর। পরিস্থিতি এখনও বিপজ্জনক হওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপত্তার জন্য সেই এলাকায় ফিরে যাওয়ার বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, হারিকেন মিল্টনের আঘাতে সেন্ট লুচি কাউন্টিতে চারজন ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এছাড়া, সেন্ট পিটার্সবার্গের পশ্চিম উপকূলে পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। সেখানকার একটি সংবাদপত্র ভবনের ওপর একটি ক্রেন ভেঙে পড়েছে এবং একটি বেসবল স্টেডিয়ামের ছাদ উড়ে গেছে,
ফ্লোরিডা জরুরি পরিস্থিতি ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিচালক কেভিন গুথরি জানিয়েছেন যে, হারিকেন মিল্টন স্থলভাগে আঘাত হানার আগেই প্রায় ১২৫টি বাড়ি লন্ডভন্ড করে দেয়। এর মধ্যে অনেক বাড়ি প্রবীণ নাগরিকদের জন্য তৈরি করা হয়েছিল, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
অ্যামেরিকারর ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার জানিয়েছে, হারিকেন মিল্টন বুধবার রাতে স্থলভাগে আঘাত হানে। আঘাতের সময় এটি কিছুটা দুর্বল হয়ে ২ মাত্রার ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয়। এ সময় হারিকেনটির কেন্দ্রে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১১০ মাইল (১৭৫ কিলোমিটার)। এটি ঘণ্টায় ১৬ মাইল (২৬ কিলোমিটার) বেগে পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছিল।
ফ্লোরিডার বন্দরনগরী ফোর্ট শেয়ারে হারিকেন মিল্টনের আঘাতের পর জলোচ্ছ্বাসের পানি সেখানকার রাস্তাঘাট প্লাবিত করেছে। আটলান্টিক উপকূলে ফোর্ট পিয়ার্সের কাছে স্পেনিস লেকস কান্ট্রি ক্লাব এলাকাও হারিকেনের তাণ্ডবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে অনেক ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে, যা স্থানীয়দের জন্য চরম সংকট তৈরি করেছে।
সেন্ট লুচি কাউন্টির শেরিফ কেইথ পিয়ারসন ডব্লিউপিবিএফ নিউজকে বলেছেন, “আমরা কিছু প্রাণ হারিয়েছি।” ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিসের মতে, হারিকেন মিল্টনের প্রভাবে বৃহস্পতিবার ফ্লোরিডাজুড়ে বিধ্বংসী বৃষ্টি এবং বিপজ্জনক বাতাস হতে পারে। তবে, রাতের দিকে এই ঘূর্ণিঝড়টি আটলান্টিক মহাসাগরে নেমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
হারিকেন হেলেনের বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠার মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যেই স্টেইটটি আবারও বড় ধরনের দুর্যোগের মুখে পড়ল। ওই হারিকেনে ফ্লোরিডা, জর্জিয়া, দক্ষিণ ক্যারোলাইনা, টেনেসি, ভার্জিনিয়া ও উত্তর ক্যারোলাইনা স্টেইটে অন্তত ২২৫ জন প্রাণ হারিয়েছিলেন।
সাধারণত অ্যামেরিকার ১ জুন থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত হারিকেনের মৌসুম। এবারের মৌসুমে এখন পর্যন্ত ৯টি হারিকেন আঘাত হেনেছে। এর মধ্যে পাঁচটিই আঘাত হেনেছে সেপ্টেম্বরের মধ্যভাগের পর। এই তথ্য অ্যামেরিকারর ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমোসফেরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের।