বাংলাদেশের কক্সবাজারের টেকনাফের সেন্টমার্টিনের কাছে মিয়ানমারের নৌবাহিনীর গুলিতে জেলে নিহতের ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। শুক্রবার (১১ অক্টোবর) ঢাকায় মিয়ানমারের দূতাবাসে পত্র পাঠিয়ে এ প্রতিবাদ জানানো হয়।
গত বুধবার সেন্টমার্টিনে মিয়ানমারের নৌবাহিনীর গুলিতে নিহত হন উসমান (৬০) নামের এক জেলে। তিনি টেকনাফের শাহ পরীর দ্বীপের কোনাপাড়ার বাসিন্দা ছিলেন। তিনি পুরনো রোহিঙ্গা বলে জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের ইউপি সদস্য আবদুস সালাম এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, তাঁর এলাকার লোকজন ছয়টি ট্রলার নিয়ে সেন্টমার্টিনের অদূরে বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকারে যায়, এসময় মিয়ানমারের নৌবাহিনী গুলি চালায়। এতে একজন মারা যান। এছাড়া আরও দুই জন গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পেয়েছি। গতকাল বুধবার বিকেলে সেন্টমার্টিন দ্বীপ থেকে ৩০ কিলোমিটার ভিতরে বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকারের সময় ছয়টি বোটে এ ঘটনা ঘটে।
ট্রলার মালিক সাইফুল জানানা, বুধবার সাগরে মাছ ধরার সময় হঠাৎ মিয়ানমার নৌবাহিনীর সদস্যরা ধাওয়া করে গুলি বর্ষণ শুরু করে। এতে তার ট্রলারের তিনজন গুলিবিদ্ধ হন এবং এদের মধ্যে একজন মারা যান। পরে নৌবাহিনীর সদস্যরা ৬ ট্রলারসহ সবাইকে আটক করে। তবে বৃহস্পতিবার একটি ট্রলার, নিহত ও আহতসহ ১১ জনকে ছেড়ে দেয়। মিয়ানমার নৌবাহিনীর কাছে পাঁচটি ট্রলারসহ অন্যান্য বাংলাদেশি জেলেরা এখনো আটক আছেন।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিবাদ বার্তায় বলা হয়, বাংলাদেশ এই মর্মান্তিক ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। টেকনাফ উপজেলার সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের কাছে মাছ ধরার সময় উসমানের নৌকাসহ ছয়টি মাছ ধরার নৌকা ও ৫৮ জন বাংলাদেশি জেলেকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়। বাংলাদেশ কোস্টগার্ড ও মিয়ানমার নৌবাহিনীর মধ্যে যোগাযোগের পর অবশেষে গতকাল দুই দফায় নৌকাসহ জেলেদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ সরকার মিয়ানমারকে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত কর্মকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি রোধে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। মিয়ানমারকে বাংলাদেশের ভূখণ্ডের জলসীমার অখণ্ডতার প্রতি পূর্ণ সম্মান জানানো এবং আর কোনো উসকানি থেকে বিরত থাকার জন্য স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে প্রতিবাদ বার্তায়।

previous post