সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ২০২০ সালের নির্বাচনে হেরে গেছেন, এমন কথা স্বীকার করতে নারাজ রিপাবলিকান ভিপি প্রার্থী ও ওহাইওর সেনেটর জেডি ভ্যান্স।
নিউ ইয়র্ক টাইমসের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে, ওহাইওর সিনেটর জেডি ভ্যান্সকে ২০২০ সালের নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরাজয় নিয়ে পাঁচ দফা প্রশ্ন করা হলেও, তিনি প্রতিবারই সরাসরি উত্তর দিতে রাজি হননি। বরং ভ্যান্স পাল্টা প্রশ্ন করে সাক্ষাৎকার গ্রহণকারী টাইমসের উপস্থাপিকার সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন।
নির্বাচনের জন্য অ্যামেরিকার বেশিরভাগ স্টেইটে ডাকযোগে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। মন্টানা, আরকানসাস এবং অ্যালাস্কা স্টেইটেও শুক্রবার থেকে অ্যাবসেন্টি ব্যালট এবং ডাকযোগে ভোট দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাওয়া যাচ্ছে। তবে, ব্যাটেলগ্রাউন্ড স্টেইটগুলোতে রিপাবলিকানরা মেইল-ইন ব্যালটের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। তাদের দাবি, ডাকযোগে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়াটি সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে না এবং এতে সম্ভাব্য অনিয়মের ঝুঁকি রয়েছে।
সিএনএন সরেজমিনে পরীক্ষা করে নর্থ ক্যারোলাইনার মেইল-ইন ব্যালটের প্রক্রিয়া সবার সামনে উপস্থাপন করেছে। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নর্থ ক্যারোলাইনার নির্বাচন কর্তৃপক্ষ মেইল-ইন ব্যালট প্রক্রিয়াটি স্বচ্ছ রাখতে সবার জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছে। যে কেউ চাইলে এই প্রক্রিয়াটি পরীক্ষা করে দেখতে পারবেন, এবং এটি সরাসরি পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন।
নির্বাচনি প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য দুই দলের নির্বাচনি প্রচারণায় যুক্ত থাকা প্রতিনিধিরাও সার্বক্ষণিকভাবে এই প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করছেন।
নেভাডা, মিশিগান, পেনসিলভেনিয়া, এবং নর্থ ক্যারোলাইনার মতো গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটেলগ্রাউন্ড স্টেইটগুলোতে মেইল-ইন ব্যালটের প্রক্রিয়া খোলামেলা ও স্বচ্ছ করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া সত্ত্বেও, রিপাবলিকানরা (লাল শিবির) আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে। তারা মেইল-ইন ব্যালটের খুঁটি-নাটি বিভিন্ন বিষয়ে আপত্তি তুলেছে, যেমন ব্যালট গণনার সময়সীমা, সাক্ষরের বৈধতা, এবং ব্যালট পুনরায় যাচাইয়ের মতো বিষয়। তবে, স্টেইট গুলির সুপ্রিম কোর্ট এই আপত্তিগুলো খারিজ করে দিয়েছে।
পেনসিলভেনিয়ার গভর্নর জশ শ্যাপিরো সম্প্রতি গণমাধ্যমে মন্তব্য করেছেন যে, ডোনাল্ড ট্রাম্প পুরোনো কৌশল অবলম্বন করবেন, যা তার কাছে নতুন কিছু নয় এবং এতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। শ্যাপিরো ইঙ্গিত করেছেন যে, ট্রাম্প এবং তার সমর্থকরা ২০২০ সালের নির্বাচনের মতোই মেইল-ইন ব্যালট এবং নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে সন্দেহ ও বিতর্ক তৈরির চেষ্টা চালিয়ে যেতে পারেন।
এদিকে, পেনসিলভেনিয়ায় নির্বাচনি কর্মকর্তারা ভোটারদের মধ্যে ডাকযোগে ভোট দেওয়ার বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে পদক্ষেপ নিচ্ছেন। তারা হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন, যাতে ভোটাররা সঠিকভাবে মেইল-ইন ব্যালট প্রক্রিয়া বুঝতে পারেন এবং কোনো ধরণের ভুল বা অসঙ্গতি না ঘটে।
আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে বিতর্কের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। ২০২০ সালের নির্বাচনের পর থেকে যেসব বিতর্ক দেখা দিয়েছে, তার সম্পূর্ণ সমাধান এখনো হয়নি। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এখনও বিশ্বাস করেন যে, তার সেই নির্বাচনের জয় “ছিনিয়ে নেওয়া” হয়েছে, এবং এ নিয়ে তার সমর্থক ও রিপাবলিকান শিবিরে গভীর ক্ষোভ রয়েছে। ফলে আসন্ন নির্বাচনেও একই ধরনের বিতর্ক এবং আইনি চ্যালেঞ্জ দেখা দিতে পারে বলে জোর শঙ্কা রয়েছে।
এই প্রসঙ্গে ট্রাম্পের রানিংমেট, ওহাইওর সিনেটর জেডি ভ্যান্সকে নিউ ইয়র্ক টাইমসের সাক্ষাৎকারে মুখোমুখি করা হয়।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের একান্ত অনুগত প্রমাণ করতেই প্রশ্নের উত্তর দিতে অস্বীকার করেছেন ভ্যান্স। তারা বলছেন, আগুন নিয়ে খেলছেন এটা বেশ ভালোই বুঝতে পারছিলেন জেডি। তাই সাবেক প্রেসিডেন্টের বিরাগভাজন হতে চাননি।
তবে ভাইস প্রেসিডেন্ট কামালা হ্যারিস বলেছেন, জ্বী-হুজুর প্রকৃতির ব্যক্তিত্ব তিনি পছন্দ করেন না।
২০২০ সালের নভেম্বর সেনেটর জেডি ভ্যান্স স্বীকার করে নিয়েছিলেন, ট্রাম্পের পরাজয় জনতা ধীরে ধীরে মেনে নেবে। কিন্তু রানিংমেইট হওয়ার পর সাবেক প্রেসিডেন্টের সব কথাই বিনা প্রশ্নে মেনে নিচ্ছেন তিনি।
previous post