সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতেই আছেন। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেছেন। তিনি বলেন, নিরাপত্তার কারণে খুব অল্প সময়ের নোটিশে শেখ হাসিনা ভারতে চলে এসেছিলেন। এখনো আছেন।
শেখ হাসিনার অবস্থান নিয়ে সম্প্রতি বিভিন্ন জল্পনা চলছে, বিশেষ করে গণমাধ্যমে এই বিষয়ে নানা রকম তথ্য প্রচারিত হচ্ছে। কিছু সংবাদমাধ্যমে বলা হচ্ছে, তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতে গেছেন, আবার কিছু প্রতিবেদন বলছে, ভারত সরকার তাকে ‘ট্রাভেল ডকুমেন্ট’ ইস্যু করেছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এই বিষয় নিয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন, এবং মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল তখন জানান যে শেখ হাসিনা বর্তমানে ভারতে আছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ভারতে চলে আসার বিষয়ে আগেই জানানো হয়েছিল, নিরাপত্তার কারণে অল্প সময়ের নোটিশে তিনি ভারতে চলে এসেছিলেন। এখনো আছেন, থাকবেন (কন্টিনিউজ টু বি)।
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে একাধিক প্রশ্ন ওঠে, বিশেষ করে শেখ হাসিনার অবস্থান এবং বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা নিয়ে। এর মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের পক্ষ থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা। ট্রাইব্যুনাল তাদের ১৮ নভেম্বরের মধ্যে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
ভারত সরকারের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল জানান যে, তারা এই বিষয়ে প্রতিবেদন দেখেছেন, তবে এর বাইরে কোনো মন্তব্য করতে চাননি।
বাংলাদেশে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ও বিচারিক অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা এবং অন্তর্বর্তী সরকারের আরও কিছু সিদ্ধান্ত, যেমন ঐতিহাসিক ৭ মার্চ, ১৭ মার্চসহ ৮টি জাতীয় দিবস বাতিল করার বিষয়টি আন্তর্জাতিক মহলের নজরে এসেছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এই সংক্রান্ত প্রশ্নও তোলা হয়। তবে, ভারতের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল এই বিষয়েও কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর থেকে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশিদের জন্য ভারতের ভিসাপ্রক্রিয়া স্বাভাবিক হয়নি। স্বাভাবিকতা ফিরে আসার সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে রণধীর জয়সোয়াল বলেন, জরুরি প্রয়োজন ও চিকিৎসা–সংক্রান্ত ক্ষেত্রে সীমিত আকারে ভিসা দেওয়া হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলার উন্নতি হলে এবং পরিস্থিতি অনুকূল হলে ভিসাপ্রক্রিয়ারও উন্নতি হবে।
এ প্রসঙ্গে জয়সোয়াল আরও বলেন, সে দেশে সংখ্যালঘুদের ওপর, হিন্দুদের ওপর আক্রমণ ও দুর্গাপূজার মণ্ডপে ভাঙচুরের বিরুদ্ধে ভারত বিবৃতি দিয়েছিল। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার তখন সংখ্যালঘুদের রক্ষা করার আশ্বাস দিয়েছিল। সেই প্রতিশ্রুতি তাদের পালন করা দরকার।
