বঙ্গবন্ধুকে জাতির পিতা মেনে মুক্তি সংগ্রাম শুরুর বিষয়টি কেবল মৌখিক ঘোষণা ছিল না, ছিল লিখিত। মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণাপত্রেও তাই লেখা। শুক্র শুক্রতে আটদিন যেতে না যেতেই নখ দাঁত দেখিয়ে নাহিদ ইসলামরা ইতিহাস পাল্টাতে পারবেন?
এনওয়াই বাংলা স্পেশাল

১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের ঘোষণাপত্রেও বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়
কিছু একটা হয়ে গেলেই হামবরা ভাব দেখানো নিয়ে একটি প্রবাদ আছে বাংলায়। সেটি হল দুই দিনের বৈরাগী, ভাতেরে হয় অন্ন। এই মানুষগুলো নিজেকে অতি বড় মনে করে পাত্তা দিতে চায় না আশেপাশের মানুষদের।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ক্ষমতায় আসা অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম দেশবাসীকে যে ইতিহাসের নতুন পাঠ শেখাতে চাইছেন, তাতে এই প্রবাদই মনে পড়ে যায়।
তিনি বাঙালির মুক্তির সংগ্রামে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকাকে পাত্তা দিতে চান না। পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়াই হয়েছে যার নেতৃত্বে, তাতে তিনি ‘কাকে জাতির পিতা’ বলে উড়িয়ে দিতে চাইছেন। ক্ষমতা পেয়ে হুঁশ হারিয়ে হামবড়া ভাব দেখাচ্ছেন।

বঙ্গবন্ধুকে জাতির পিতা ঘোষণা করেই স্বাধীনতা সংগ্রামে নামার ঘোষণা আসে ১৯৭১ সালের ৩ মার্চ
মুহাম্মদ ইউনূস ক্ষমতা নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রশ্নে অতীত রিসেট করার কথা বলেছিলেন, অতীতের সব কিছু নাকি মুখে গেছে। পরে আবার সমালোচনার মুখে কথা ঘুরিয়ে বলা হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধ আমাদের হার্ডওয়্যার।
কিন্তু সেই মুক্তিযুদ্ধ আর তার মহানায়ককে অবমাননা করার সব কাজই এই সরকার করে যাচ্ছে। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের দিনটি, ৪ নভেম্বর সংবিধান গ্রহণের দিনটি আর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার দিনটিকে জাতীয় দিবস হিসেবে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এরপর নাহিদ যে ভাষায় কথা বলেছেন, সেটি সেই দুই দিনের বৈরাগীর ভাষা হয়ে যায়। তিনি জানান, বঙ্গবন্ধুকে অন্তর্বর্তী সরকার জাতির পিতা হিসেবে স্বীকার করে না।

অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম মুক্তিযুদ্ধের নতুন ইতিহাস লিখতে চাইছেন
এর ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ দল হিসেবে ফ্যাসিস্টভাবে ক্ষমতায় ছিল। মানুষের ভোটাধিকার হরণ ও গুম-খুন করে এবং গণহত্যা করে তারা ক্ষমতায় ছিল। কাজেই তারা কাকে জাতির পিতা বলল, তারা কোন দিবসকে জাতীয় দিবস ঘোষণা করল, নতুন বাংলাদেশে সেটার ধারাবাহিকতা থাকবে না।”
তিনি পাল্টা প্রশ্ন রাখেন, বঙ্গবন্ধুকে কে জাতির পিতা বলেছেন।
বাঙালির মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাস অন্তর্বর্তী সরকারের পছন্দ হবে না, সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ইতিহাসের পাঠ যে একদম নেই সেটি স্পষ্ট করে দিয়েছেন নাহিদ।
কারণ, বঙ্গবন্ধুকে জাতির পিতা হিসেবে ঘোষণা করেই মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে, এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েই উত্তোলন হয়েছে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পতাকা।
জনাব নাহিদ ইসলাম তারিখটা ৩ মার্চ, ১৯৭১। সেদিন আন্দোলনকারীরা কেউ তাদের রাজনৈতিক পরিচয় লুকিয়ে কাজ করেননি। তাদের মধ্যে রাজনৈতিক অসসতা ছিল না।
সেদিন পল্টন ময়দানে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ব্যানারে আয়োজিত সমাবেশে বঙ্গবন্ধুর উপস্থিতিতে বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য ঘোষণা আসে।
ছাত্রনেতা শাহজাহান সিরাজ বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইশতেহার ঘোষণা করেন। এই শাহজাহান সিরাজ মুক্তিযুদ্ধের পর ছাত্রলীগ থেকে বের হয়ে জাসদ করেছেন, পরে বিএনপির হয়ে সংসদে গিয়েছেন মন্ত্রিত্বও নিয়েছেন।
সেই শাহজাহান সিরাজের ঘোষিত ইশতেহারে বঙ্গবন্ধুকে জাতির পিতা ঘোষণা করে তার নেতৃত্বে সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার শপথ নেয়া হয়।
সেই ইশতেহারে লেখা ছিল
১. এই সভা পাকিস্তানি উপনিবেশবাদ শক্তির লেলিয়ে দেওয়া …সেনাবাহিনী কর্তৃক বাঙালীদের ওপর গুলিবর্ষণে নিহত বাঙালিদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামরা করিতেছে এবং শোক সন্তপ্ত পরিবার পরিজনের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করিতেছে এবং পাকিস্তানী উপনিবেশবাদ শক্তির সেনাবাহিনীর এই জঘন্য হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে প্রতিরোধ আন্দোলন গড়িয়া তোলার জন্য আহ্বান জানাইতেছে।
২. এই সভা ভাড়াটিয়া সেনাবাহিনীর গুলিতে আহত স্বাধীনতা সংগ্রাম অংশ গ্রহণকারী বীর বাঙালী ভাইদেরকে বাঁচাইয়া রাখার জন্য স্বাস্থ্যবান বাঙালী ভাইদেরকে ব্লাডব্যাংকে রক্তদানের আহ্বান জানাইতেছে।
৩. এই সভা পাকিস্তানি উপনিবেশবাদের কবল হইতে মুক্ত হইয়া স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা, শোষণহীন সমাজ ব্যবস্থা কায়েমের জন্য সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি ও নির্ভেজাল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করিয়া স্বাধীন বাংলাদেশে কৃষক শ্রমিক রাজ কায়েমের শপথ গ্রহণ করিতেছে।
৪. এই সভা স্বাধীন বাংলার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নেতৃত্বে পূর্ণ আস্থা রাখিয়া তাহার সংগ্রাম চালাইয়া যাওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিতেছে।
৫. এই সভা দল মত নির্বিশেষে বাংলার প্রতিটি নর নারীকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের কর্তৃত্বে বাংলার স্বাধীনতা সংগ্রাম চালাইয়া যাওয়ার আহ্বান জানাইতেছে।
এর পথ ধরেই আসে ৭ মার্চ। বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করেন ‘এবারের সংগ্রাম আমার মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’
নানা ঘটনাপ্রবাহের পর ২৫ মার্চ শুরু হয় অপারেশন সার্চ লাইট। গ্রেপ্তারের আগে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে যাওয়ার কথা আমেরিকার পত্র পত্রিকাতেও প্রকাশ হয়।
২৭ মার্চ বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার যে ঘোষণাপত্র পাঠ করেন, সেটিকেও ‘অন বিহাফ অব আওয়ার ন্যাশনাল লিডার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ বলে গেছেন।
এসব ইতিহাস নতুন করে লেখা সম্ভব?
এখানেই শেষ না, ১৯৭১ সালেরই ১০ এপ্রিল স্বাধীন বাংলাদেশের যে প্রবাসী যে সরকার গঠন হয়, সেটি র স্বাধীনতার যে ঘোষণাপত্র অনুমোদন করে, সেটিও কি নাহিদ ইসলামরা পড়ে দেখেননি? এটি কিন্তু সংবিধানের অংশ আর সংবিধান রক্ষার শপথ করেই ৮ আগস্ট তারা সরকারের অংশ হয়েছেন।
স্বাধীনতার সেই ঘোষণাপত্র কিন্তু সংবিধানেও আছে।
সেখানে কী বলা হয়েছে?
যেহেতু একটি সংবিধান প্রণয়নের উদ্দেশ্যে প্রতিনিধি নির্বাচনের জন্য ১৯৭০ সনের ৭ই ডিসেম্বর হইতে ১৯৭১ সনের ১৭ই জানুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশে অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়,
এবং
যেহেতু এই নির্বাচনে বাংলাদেশের জনগণ ১৬৯ জন প্রতিনিধির মধ্যে আওয়ামী লীগ দলীয় ১৬৭ জনকে নির্বাচিত করেন,
এবং
যেহেতু সংবিধান প্রণয়নের উদ্দেশ্য জেনারেল ইয়াহিয়া খান জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিগণকে ১৯৭১ সনের ৩রা মার্চ তারিখে মিলিত হইবার জন্য আহ্বান করেন,
এবং
যেহেতু এই আহূত পরিষদ-সভা স্বেচ্ছাচারী ও বেআইনিভাবে নির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়,
এবং
যেহেতু পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ তাহাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষার পরিবর্তে এবং বাংলাদেশের প্রতিনিধিগণের সহিত আলোচনা অব্যাহত থাকা অবস্থায় একটি অন্যায় ও বিশ্বাসঘাতকতামূলক যুদ্ধ ঘোষণা করে,
এবং
যেহেতু এইরূপ বিশ্বাসঘাতকতামূলক আচরণের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষের অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণের আইনানুগ অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৯৭১ সনের ২৬শে মার্চ তারিখে ঢাকায় যথাযথভাবে স্বাধীনতার ঘোষণা প্রদান করেন এবং বাংলাদেশের মর্যাদা ও অখণ্ডতা রক্ষার জন্য বাংলাদেশের জনগণের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান,
এবং
যেহেতু একটি বর্বর ও নৃশংস যুদ্ধ পরিচালনায় পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ, অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশের বেসামরিক ও নিরস্ত্র জনগণের উপর নজিরবিহীন নির্যাতন ও গণহত্যার অসংখ্য অপরাধ সংঘটন করিয়াছে এবং এখনও অনবরত করিয়া চলিতেছে,
এবং
যেহেতু পাকিস্তান সরকার একটি অন্যায় যুদ্ধ চাপাইয়া দিয়া, গণহত্যা করিয়া এবং অন্যান্য দমনমূলক কার্যকলাপের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রতিনিধিগণের পক্ষে একত্রিত হইয়া একটি সংবিধান প্রণয়ন এবং নিজেদের জন্য একটি সরকার প্রতিষ্ঠা করা অসম্ভব করিয়া তুলিয়াছে,
এবং
যেহেতু বাংলাদেশের জনগণ তাহাদের বীরত্ব, সাহসিকতা ও বিপ্লবী উদ্দীপনার মাধ্যমে বাংলাদেশের ভূখণ্ডের উপর তাহাদের কার্যকর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করিয়াছে।
সেহেতু আমরা বাংলাদেশের নির্বাচিত প্রতিনিধিগণ, বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকার জনগণ কর্তৃক আমাদিগকে প্রদত্ত কর্তৃত্বের মর্যাদা রক্ষার্থে নিজেদের সমন্বয়ে যথাযথভাবে একটি গণপরিষদরূপে গঠন করিলাম, এবং
পারস্পরিক আলোচনা করিয়া, এবং
বাংলাদেশের জনগণের জন্য সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার নিশ্চিত করণার্থ,
সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী রূপে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠা ঘোষণা করিলাম এবং তদ্দ্বারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক ইতোপূর্বে ঘোষিত স্বাধীনতা দৃঢ়ভাবে সমর্থন ও অনুমোদন করিলাম,
এবং
এতদ্দ্বারা দৃঢ়ভাবে ঘোষণা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিতেছি যে, সংবিধান প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি থাকিবেন এবং সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রজাতন্ত্রের উপ-রাষ্ট্রপতি থাকিবেন,
এবং
রাষ্ট্রপতি প্রজাতন্ত্রের সকল সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক হইবেন,
ক্ষমা প্রদর্শনের ক্ষমতাসহ সকল নির্বাহী ও আইন প্রণয়ন ক্ষমতা প্রয়োগ করিবেন,
একজন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ এবং তাহার বিবেচনায় প্রয়োজনীয় অন্যান্য মন্ত্রী নিয়োগ ক্ষমতার অধিকারী হইবেন,
কর আরোপণ ও অর্থ ব্যয়ন ক্ষমতার অধিকারী হইবেন,
গণপরিষদ আহ্বান ও মূলতবিকরণ ক্ষমতার অধিকারী হইবেন,
এবং
বাংলাদেশের জনগণকে একটি নিয়মতান্ত্রিক ও ন্যায়ানুগ সরকার প্রদানের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় অন্যান্য সকল কার্য করিতে পারিবেন।
আমরা বাংলাদেশের জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিগণ আরও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিতেছি যে, কোন কারণে রাষ্ট্রপতি না থাকা বা রাষ্ট্রপতি তাহার কার্যভার গ্রহণ করিতে অসমর্থ হওয়া বা তাহার ক্ষমতা প্রয়োগ করিতে অসমর্থ হওয়ার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির উপর এতদ্দ্বারা অর্পিত সমুদয় ক্ষমতা, কর্তব্য ও দায়িত্ব উপ-রাষ্ট্রপতির থাকিবে এবং তিনি উহা প্রয়োগ ও পালন করিবেন।
আমরা আরও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিতেছি যে, জাতিমণ্ডলীর সদস্য হিসেবে আমাদের উপর যে দায় ও দায়িত্ব বর্তাইবে উহা পালন ও বাস্তবায়ন করার এবং জাতিসংঘের সনদ মানিয়া চলার প্রতিশ্রুতি আমরা দিতেছি।
আমরা আরও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিতেছি যে, স্বাধীনতার এই ঘোষণাপত্র ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ তারিখে কার্যকর হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।
আমরা আরও সিদ্ধান্ত করিতেছি যে, এই দলিল কার্যকর করার লক্ষ্যে এবং রাষ্ট্রপতি ও উপ-রাষ্ট্রপতির শপথ পরিচালনার জন্য আমরা অধ্যাপক ইউসুফ আলীকে আমাদের যথাযথ ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধি নিয়োগ করিলাম।
এসব ইতিহাস মুছে ফেলা সম্ভব?
নাহিদ ইসলামের যুক্তি, ‘আমাদের এই ভূখণ্ডের লড়াইয়ের ইতিহাসে বহু মানুষের অবদান রয়েছে। আমাদের ইতিহাস কিন্তু কেবল ৫২-তেই শুরু হয়নি, আমাদের ব্রিটিশবিরোধী লড়াই আছে, ৪৭ ও ৭১-এর লড়াই আছে, ৯০ ও ২৪ আছে। আমাদের অনেক ফাউন্ডিং ফাদারস রয়েছে। তাদের লড়াইয়ের ফলে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি।’
বাংলাদেশের স্বাধীনতার সংগ্রামে বহু শত বছরে বহু মানুষের অংশগ্রহণ আর নেতৃত্ব ছিল। প্রতিটি দেশেই এই কথা সত্য। প্রতিটি দেশেই শেষ পর্যন্ত যার নামে যুদ্ধ হয়, তার নেতৃত্বে স্বাধীনতা আসে, তাকেই জাতির জনক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ শুরুর আগেই লড়াইয়ে নেতৃত্ব দেওয়া মানুষদের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুকে নেতা মেনে এগিয়ে যাওয়ার এই বক্তব্য যখন কেবল মৌখিক না, লিখিত বাস্তবতা, তখন নাহিদ ইসলামদের কী সাধ্য আছে তা বিকৃত করার?