কবে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তবর্তীকালীন সরকার? বাংলাদেশে এ প্রশ্ন যখন ক্রমেই বড় হয়ে উঠছে তখন এক টক শো’তে এসে সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল জানান, আগামী বছরের মধ্যে নির্বাচন দেওয়া সম্ভব হতে পারে।
কিন্তু নিজের অবস্থানে তিনি স্থির থাকতে পারলেন না দুই দিনও। নির্বাচনের তারিখ বিষয়ে দেওয়া বক্তব্যের ব্যাখ্যা নিয়ে হাজির হলেন আসিফ নজরুল। জানালেন, নির্বাচনের সময় ঘোষণার এখতিয়ার শুধু প্রধান উপদেষ্টার।
কবে হবে নির্বাচন? এমন প্রশ্নে বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) মধ্যরাতে চ্যানেল আইয়ের সংবাদ পর্যালোচনামূলক অনুষ্ঠান ‘আজকের সংবাদ’ অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া আসিফ নজরুল বলেন, রিয়েলিস্টিক্যালি আগামী বছরের মধ্যে ইলেকশন করাটা হয়ত সম্ভব হতে পারে। সরকার কিছু দিনের মধ্যেই সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠনের উদ্যোগ নেবে। এরপর ভোটার তালিকা হালনাগাদ হবে।
এর আগে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান জানিয়েছিলেন, ১৮ মাসের মধ্যে নির্বাচন করতে ড. ইউনূসের সরকারকে সব ধরনের সহযোগিতা করবেন তারা। অর্থাৎ দেড় বছরের মধ্যে নির্বাচনের ইঙ্গিত মিলেছিল সেনাপ্রধানের কাছ থেকে।
নির্বাচনের প্রসঙ্গে আসিফ নজরুল ও সেনাপ্রধানের বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে শুক্রবার কক্সবাজারের এক অনুষ্ঠানে ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন কথা বলেছেন। তিনি জানান, অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচন কবে দেবে, এই প্রশ্নে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান ও আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের বক্তব্যকে ‘ব্যক্তিগত’। এই দুই জনের বক্তব্য সরকারের বক্তব্য নয়।
নির্বাচন নিয়ে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, একটি সরকারের পতন হয়েছে। সেই সরকারের অবশিষ্ট সময় পূরণের জন্যই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বসানো হয়েছে। তার চেয়ে বড় কথা রাষ্ট্র সংস্কার প্রসঙ্গ। সংস্কার না করে নির্বাচন দিলে রাষ্ট্র নড়বড়ই থেকে যাবে। তাই সরকার সংস্কারে গভীরভাবে কাজ করছে।
এ বিষয়ে শনিবার দুপুরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে পোস্ট দিয়েছেন আসিফ নজরুল। সেখানে তিনি বলেছেন, সম্প্রতি একটি টিভি আলোচনায় আমি বলেছি, নির্বাচন হয়তো আগামী বছরের মধ্যে সম্ভব হতে পারে, তবে এক্ষেত্রে অনেকগুলো ফ্যাক্টর রয়েছে। সেখানে এসব ফ্যাক্টর পুরোপুরি ব্যাখা করার সুযোগ পাইনি।
আসিফ নজরুল ফেইসবুকে আরও লিখেছেন, ‘কিন্তু আমাদের সরকারের কথা থেকে সবাই বুঝবেন যে নির্বাচনের জন্য সংস্কার ও রাজনৈতিক সমঝোতার কথা বলা হয়, এগুলোই সেই ফ্যাক্টর। সংস্কারের কথা আমিও অনুষ্ঠানে বলেছি। আরও কিছু ফ্যাক্টর আমি অনুষ্ঠানটিতে ব্যাখা করেছি, যেমন: সার্চ কমিটি ও নির্বাচন কমিশন গঠন, ভোটার তালিকা প্রনয়ণ ইত্যাদি। এসব ফ্যাক্টর ঠিক থাকলে নির্বাচন হয়তো হতে পারে আগামী বছর। বলেছি এটাও আমার প্রাথমিক অনুমান।’
গণমাধ্যমেরও সমালোচনা করে আইন উপদেষ্টা। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এই শর্তভিত্তিক ধারনা ও অনুমানকে কিছু গণমাধ্যম নির্বাচনের ঘোষণা হিসেবে দেখাচ্ছেন। বিনয়ের সাথে বলছি, এটা সঠিক নয়। নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পলিসি ডিসিশন। এর সময় সরকারের প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে ঠিক হবে। তিনিই একমাত্র এটা ঘোষণার এখতিয়ার রাখেন।