জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যে, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সংস্কারকাজ শেষ করে নির্বাচনী রোডম্যাপ প্রকাশ করতে হবে। জোটের নেতারা বলছেন, নির্বাচনী প্রক্রিয়া সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করার জন্য এটি অত্যন্ত জরুরি। পাশাপাশি, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দ্রুত উন্নয়ন করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণেরও অনুরোধ জানানো হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সংলাপ শেষে বেরিয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সমন্বয়ক ও এনপিপির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান।
ফরিদুজ্জামান জানান, প্রধান উপদেষ্টার কাছে জোটের পক্ষ থেকে ২৩টি লিখিত প্রস্তাব তুলে ধরা হয়েছে। এই প্রস্তাবগুলো নির্বাচনী প্রক্রিয়া সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে তৈরি করা হয়েছে।
জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের প্রস্তাবের মধ্যে উল্লেখিত বিষয়গুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জোটের নেতাদের দাবি হলো, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে যারা নিহত এবং আহত হয়েছেন, তাদের নাম তালিকা থেকে বাদ পড়েছে।
আহত ব্যক্তিদের দ্রুত এবং উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনে, চিকিৎসার জন্য তাদের বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা গ্রহণেরও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
প্রস্তাবে বলা হয়েছে, দ্রব্যমূল্য মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আনতে হবে। সিন্ডিকেট ভেঙে দোষীদের আইনের আওতায় আনতে হবে। নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হবে। প্রতিটি মন্ত্রণালয়ের জন্য একজন সৎ, দক্ষ, কর্মঠ উপদেষ্টা নিয়োগ করতে হবে। প্রতি মাসে মন্ত্রণালয়ের কাজের অগ্রগতি জনসমক্ষে প্রকাশ করতে হবে।
প্রস্তাবে আরও বলা হয়েছে, আওয়ামী সরকারের দুর্নীতিবাজ দোসররা বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন। তাঁদের দ্রুত অপসারণ করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশের জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠিত হতে হবে। কোনো আনুপাতিক হার গ্রহণযোগ্য নয়। নির্বাচিত সংসদে সংবিধান সংস্কার করতে হবে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার সংবিধানের বড় কোনো সংস্কার করবে না।
জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের প্রস্তাবে আরও বলা হয়, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে এবং তাঁদের অবৈধ সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে হবে। বাংলাদেশ থেকে যে পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার করা হয়েছে, সেগুলো ফেরত আনতে হবে এবং পাচারকারীদের আইনের আওতায় আনতে হবে।
প্রস্তাবে আরও উল্লেখ করা হয়, পিলখানা হত্যার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচারকাজ শেষ করতে হবে এবং নির্দোষ তৎকালীন বিডিআর সদস্যদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে। বিজিবির নাম পরিবর্তন করে ‘বিডিআর’ নাম রাখতে হবে।
বাজার পরিস্থিতির উল্লেখ করে প্রস্তাবে বলা হয়, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য ও ওষুধের দাম মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আনতে হবে৷ স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক বাতিল করতে হবে। বিচার বিভাগের জন্য স্বাধীন স্বতন্ত্র সচিবালয় গঠন করতে হবে। ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে এবং প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রণয়ন করতে হবে।

previous post