সাবেক প্রেসিডেন্ট এবং রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প শনিবার পেনসিলভেনিয়ার ওয়েস্টমোরল্যান্ড কাউন্টির লিট্রোব শহরে অনুষ্ঠিত একটি জনসমাবেশে ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী কামালা হ্যারিসকে নিয়ে কড়া মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, যদি কামালা হ্যারিস নির্বাচনে জয়ী হন, তাহলে দেশে “বিপর্যয়” নেমে আসবে।
ট্রাম্পের এই বক্তব্য তার প্রচারণার অংশ, যেখানে তিনি ডেমোক্র্যাটিক নীতির সমালোচনা করে নিজ দলের সমর্থকদের উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করছেন। ট্রাম্প বর্তমানে ২০২৪ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য রিপাবলিকান দলের মনোনয়নপ্রার্থী।
ডোনাল্ড ট্রাম্প তার সমাবেশের শুরুতেই অ্যামেরিকায় মূল্যস্ফীতি এবং সীমান্ত সংকটের বিষয়ে আলোচনা করেন। তিনি দাবি করেন যে, কামালা হ্যারিসের নেতৃত্বের কারণে অ্যামেরিকার দক্ষিণ সীমান্ত দিয়ে প্রায় ২১ মিলিয়ন অবৈধ শরণার্থী প্রবেশ করেছে, যাদের মধ্যে বহু অপরাধী, মানসিকভাবে অসুস্থ ব্যক্তি এবং মাদক পাচারকারী রয়েছে। ট্রাম্প বলেন, এসব শরণার্থীকে অবশ্যই নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো উচিত।
ডোনাল্ড ট্রাম্প তার সমাবেশে প্রতিশ্রুতি দেন যে, যদি তিনি নির্বাচনে জয়ী হন, তাহলে মূল্যস্ফীতি কমানো, আরও বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, এবং সীমান্ত সংকট মোকাবেলায় কার্যকর পদক্ষেপ নেবেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্প তার সমাবেশে কামালা হ্যারিসের নীতির সমালোচনা করে বলেন, অ্যামেরিকার জ্বালানি খাতকে শক্তিশালী করতে মাটির নিচ থেকে গ্যাস উত্তোলন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু যদি কামালা হ্যারিস জয়ী হন, তিনি গ্যাস খনন কার্যক্রম বন্ধ করে দেবেন, যা দেশের রাজস্ব হ্রাসের পাশাপাশি পেনসিলভেনিয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যের হাজারো মানুষকে বেকারত্বের মুখে ফেলবে।
ট্রাম্প দাবি করেন যে, এটি দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা ও অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর হবে। তাই তিনি জনগণকে আহ্বান জানান, তারা যেন হ্যারিসকে ভোট না দিয়ে তার বিপক্ষে অবস্থান নেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্প তার শাসনামলে অ্যামেরিকার জ্বালানি স্বনির্ভরতার ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং দাবি করেন যে, তার সময়ে দেশ জ্বালানিতে স্বনির্ভর ছিল, যার ফলে বিদ্যুৎ এবং জ্বালানির দামও কম ছিল। তিনি হুঁশিয়ারি দেন যে, যদি গ্যাস খনন বন্ধ করা হয়, তাহলে সব কিছুর দাম বাড়বে, যা সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রাকে আরো কঠিন করে তুলবে। তাই খনন বন্ধ করাকে হ্যারিসের পাগলামো ছাড়া আর কিছুই নয় বলে মন্তব্য করেন রিপাবলিকান এই প্রার্থী।
ডোনাল্ড ট্রাম্প তার সমাবেশে প্রতিশ্রুতি দেন যে, ক্ষমতায় ফিরলে তিনি ম্যানুফ্যাকচারিং, জ্বালানি, কয়লা, এবং ইস্পাত খাতে আরও বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করবেন। তিনি বলেন, এসব শিল্প খাতের উন্নয়ন দেশকে অর্থনৈতিকভাবে আরও শক্তিশালী করবে এবং দেশীয় উৎপাদন বাড়াবে। ট্রাম্প আরও আশ্বাস দেন যে, যারা অ্যামেরিকার শিল্পখাতে বিনিয়োগ করবে, তাদের কর্পোরেট ট্যাক্স কমিয়ে দেওয়া হবে, যাতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো আরও লাভবান হয় এবং দেশের অর্থনীতিতে বিনিয়োগের প্রবাহ বৃদ্ধি পায়।
ট্রাম্প দাবি করেন, বাইডেন প্রশাসন এদেশে ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের ওপর নিপীড়ন চালিয়েছে, তাদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছে। এছাড়া রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে জাস্টিস ডিপার্টমেন্টকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে তারা।
previous post