গত ১৯ অক্টোবর, শনিবার দৈনিক মানবজমিনের রাজনৈতিক ম্যাগাজিন সংস্করণ ‘জনতার চোখ’- এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী লিখেছেন, ‘রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন বলেছেন, তিনি শুনেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন, কিন্তু তার কাছে এ সংক্রান্ত কোনো দালিলিক প্রমাণ বা নথিপত্র নেই।‘
এনওয়াই বাংলা স্পেশাল
এই নিয়ে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন ও মিডিয়াপাড়ায় তোলপাড় চলছে। জনতার চোখের প্রতিবেদনটি দেশের প্রায় সকল গণমাধ্যম গুরুত্ব সহকারে প্রকাশ করেছে। এতে সাধারণ জনগণের মধ্যেও বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে।
সত্যিই কি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেননি? এই প্রশ্ন গত ৬ আগস্ট থেকেই উত্থাপিত হয়ে আসছে। শেখ হাসিনাপুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় প্রথম এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন ও চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছিলেন। সেই থেকে বিষয়টি নিয়ে ওয়াকিবহাল মহলে প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য আলোচনা চলছে। সর্বশেষ মতিউর রহমান চৌধুরীর প্রতিবেদন এই সত্যকেই প্রতিষ্ঠিত করেছে।
আজ ২১ অক্টোবর সরকারের আইন উপদেষ্টা সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছেন, রাষ্ট্রপতির পক্ষে এমন মন্তব্য তাঁর ৫ আগস্ট রাত ১১.২০মিনিটে জাতির উদ্দেশে প্রদত্ত ভাষণের সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং এরপরে তাঁর স্বপদে থাকার অধিকার নিয়েও প্রশ্ন তোলেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। সামাজিক মাধ্যমে ছাত্রনেতারাও বিভিন্ন মন্তব্য করেছেন। এই প্রতিবেদন লেখার সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের সাংবাদিক সম্মেলন চলছিল।
মতিউর রহমান চৌধুরীর যে প্রতিবেদন নিয়ে এত তোলপাড়, সেটি আদৌ সত্য কিনা তা নিয়ে অনুসন্ধান চালায় এনওয়াই বাংলা লাইফ। বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
জানা যায় গত ২৬ সেপ্টেম্বর মহামান্য রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বঙ্গভবনে দেখা করেন দৈনিক মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী। যা ছিল পুরানো সম্পর্কের সূত্র ধরে নিতান্তই সৌজন্য সাক্ষাৎ। সাক্ষাতের সময় বঙ্গভবনের কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাও উপস্থিত ছিলেন। সেখানে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কুশল বিনিময় ছাড়াও দেশের সাম্প্রতিক অন্যান্য বিষয়েও খোলামেলা আলাপ হয়।
কিন্তু শেখ হাসিনার পদত্যাগ সম্পর্কিত কোন প্রসঙ্গ আলোচনাই হয়নি বলে নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে। তাছাড়া জনতার চোখে যেটিকে একান্ত সাক্ষাৎকার বলে উল্লেখ করা হয়েছে, সেটি মোটেও একজন সাংবাদিককে দেওয়া একান্ত কিংবা অন্য কোনরকম সাক্ষাৎকার প্রদানও ছিল না। বর্তমানে যেকোন সাক্ষাৎকারের অডিও বা ভিডিও রেকর্ডিং করার রেওয়াজ বিশ্বজনীন।
কিন্তু এতে তাও ছিল না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বঙ্গভবনের একজন কর্মকর্তা বলেন, মহামান্য রাষ্ট্রপতির সঙ্গে পূর্ব সম্পর্কের সূত্রে মতিউর রহমান চৌধুরীর সৌজন্য সাক্ষাতটিকে একান্ত সাক্ষাৎকার কিংবা প্রতিবেদন হিসেবে পত্রিকায় প্রকাশ করা অনৈতিক ও অন্যায় কাজ হয়েছে। এর পেছনে কোন ষড়যন্ত্র আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।