ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরে সম্প্রতি উত্তেজনা পুনরায় বৃদ্ধি পাওয়ায় রাজ্য সরকার কারফিউ জারি করেছে এবং ইন্টারনেট সেবা সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে। সর্বশেষ ঘটনায় ছয়জনের মরদেহ উদ্ধারের পর পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এর ফলে এলাকাজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়, যা নিয়ন্ত্রণে আনতেই সরকার এই পদক্ষেপ নিয়েছে। বেশ কয়েক মাস ধরে এ রাজ্যে জাতিগত উত্তেজনা বিরাজ করছে।
ধারণা করা হচ্ছে মরদেহগুলো মেইতেই সম্প্রদায়ের। গত সপ্তাহে জিরিবাম জেলায় মণিপুর পুলিশ ও কুকি বিদ্রোহীদের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধ হয়। ওই ঘটনার পর থেকে তাঁরা নিখোঁজ ছিলেন।
মণিপুরের স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, জিরিবামের একটি নদী থেকে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। অন্য তিনজনের মরদেহ আজ পাওয়া গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সেনাবাহিনীর একটি সূত্র এএফপিকে জানিয়েছে, মরদেহগুলো উদ্ধারের খবর ছড়িয়ে পড়লে ক্ষুব্ধ জনতা বেশ কয়েকজন স্থানীয় রাজনীতিকের বাড়িতে হামলা চালিয়েছেন। তবে এতে সামান্যই ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
বিক্ষোভকারীরা টায়ার জ্বালিয়ে রাজধানী ইম্ফলের সড়ক অবরোধ করেন। এরপর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কায় শহরে কারফিউ জারির ঘোষণা দেয় মণিপুর সরকার।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দুই দিনের জন্য মণিপুরের ব্রডব্যান্ড ও মোবাইল ইন্টারনেট সেবা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, সহিংসতার কারণে গত বছর কয়েক মাস মণিপুরে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ রাখা হয়েছিল। ওই সময় অন্তত ৬০ হাজার মানুষ গৃহহীন হন।
ওই ঘটনার পর থেকে কয়েক হাজার বাসিন্দা জরুরি আশ্রয়শিবিরে বসবাস করছেন। চলমান বিরোধের কারণে তাঁরা এখনো নিজের বাড়িতে ফিরতে পারছেন না।
সরকারি চাকরি ও জমি নিয়ে দ্বন্দ্বের কারণে মেইতেই ও কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। মানবাধিকারকর্মীদের অভিযোগ, রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য স্থানীয় নেতারা জাতিগত বিভাজন বাড়াচ্ছেন।
