বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিষয়ে তার আইনজীবীদের দেয়া বিবৃতি অনুযায়ী, তারেক রহমানের সম্মতি পাওয়া গেলে সরকারের কাছে তার সাজা স্থগিত করার জন্য আবেদন করা হবে। এ বিষয়ে দলটির আইনজীবী নেতা অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন এ তথ্য জানিয়েছেন।
তবে অন্য আরেকজন আইনজীবী, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, উল্লেখ করেছেন যে, তারেক রহমান আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই দেশে ফিরবেন এবং তিনি কবে দেশে ফিরবেন সেই সিদ্ধান্তও তিনি নিজেই নেবেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর দেশ ছেড়ে ইংল্যান্ড চলে যান। এরপর থেকে তিনি সেখানে অবস্থান করছেন। দেশত্যাগের পর তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের করা হয়। এসব মামলার মধ্যে চারটি মামলায় তাকে বিভিন্ন মেয়াদের সাজা দেয়া হয়, যার মধ্যে একটি মামলায় তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডও রয়েছে।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর তারেক রহমানের বক্তব্য দেশের সব গণমাধ্যম প্রচার করে। দলটির সিনিয়র নেতারাও বলেন, খুব শিগগিরই দেশে ফিরবেন তারেক রহমান। তবে ৪৫ দিন পরও তাকে ফেরানোর আইনি বাধা কাটাতে দৃশ্যমান কোন উদ্যোগ চোখে পড়েনি।
বিএনপির আইনজীবী ফোরামের সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেন, তারেক রহমানের সম্মতির অপেক্ষায় রয়েছেন তারা। সম্মতি পেলেই ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা প্রয়োগ করে তারেক রহমানের সাজা স্থগিতের আবেদন করা হবে সরকারের কাছে। এ ধারা প্রয়োগ করেই বেগম খালেদা জিয়াকে সাময়িক মুক্তি দিয়েছিলো আওয়ামী লীগ সরকার।
তবে বিএনপির আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, ‘আইনি পথে ছাড়া অন্য কোন পথে ফিরবেন না তারেক রহমান। তিনি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।
যে কারণে ওনার বিরুদ্ধে যেসব মামলার রায় হয়েছে, সেগুলো তিনি আইনগতভাবে মোকাবিলা করবেন। আর যেগুলোর রায় হয়নি, সেগুলোর বিষয়ে আইনগতভাবে আমরা পদক্ষেপ নিচ্ছি।এছাড়া, তারেক রহমান কবে ফিরবেন সে সিদ্ধান্তও তিনি নিজে নেবেন।’
আর ফৌজদারি আইন বিশেষজ্ঞ এস এম শাহজাহান বললেন, তারেক রহমানের উচিত দেশে ফিরে মামলা বাতিলের আবেদন করা।
তারেক রহমানের বিরুদ্ধে অর্ধশতাধিক মামলা রয়েছে, যেগুলো ২০০৭ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দায়ের করা হয়। তারেক রহমান ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত হন, যা তার বিরুদ্ধে সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগগুলোর মধ্যে একটি। এছাড়া আরও পাঁচটি মামলার বিচার শেষ করে তাকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়।
তবে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, কোনো মামলাতেই তিনি কারাবাস বা সাজার মেয়াদ ভোগ করেননি, কারণ তিনি দেশের বাইরে অবস্থান করছেন এবং তাকে পলাতক দেখিয়ে এসব মামলার বিচার সম্পন্ন হয়েছে। কিছু মামলার বিচার প্রক্রিয়া এখনও স্থগিত রয়েছে, এবং এর ফলে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে আইনি বাধা অব্যাহত রয়েছে।
দীর্ঘ ১৬ বছর সপরিবারে ইংল্যান্ডে নির্বাসিত জীবন কাটাচ্ছেন বিএনপির এই নেতা।
previous post