দ্বিতীয় হত্যার চেষ্টা থেকে বেঁচে যাওয়ার পর, ডোনাল্ড ট্রাম্প সিডেন্টের সমপর্যায়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রচারণা চালান। নিউইয়র্কে এক সভায় ট্রাম্প বলেন, বারবার হত্যার চেষ্টায় তার মনোবল কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।
অন্যদিকে, ওয়াশিংটন ডিসিতে কামালা হ্যারিস অভিযোগ করেন, ট্রাম্প এবং তার কট্টর মিত্ররা দেশটিকে পিছনে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর দুই মাসের ব্যবধানে দ্বিতীয়বারের মতো হত্যার চেষ্টা করার ঘটনায় প্রশাসন অত্যন্ত সতর্ক হয়ে উঠেছে। এর প্রতিক্রিয়ায়, ট্রাম্পের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নতুন করে ঢেলে সাজানো হয়েছে।
এখন ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মতোই সর্বোচ্চ পর্যায়ের নিরাপত্তা প্রদান করা হচ্ছে। গোয়েন্দা সংস্থা সিক্রেট সার্ভিস এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে, যা তার নিরাপত্তার গুরুত্বকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসার পর, ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি তার সমর্থকদের ভালোবাসা ও সমর্থন বহুগুণে বেড়েছে। অনেক সমর্থকই তাকে নিয়ে গভীর আবেগ প্রকাশ করেছেন এবং বলেছেন যে, তারা ট্রাম্পের জন্য বন্দুকের সামনে বুক পেতে দিতেও প্রস্তুত।
এমনকি কিছু সমর্থক তাকে “ঈশ্বরের দূত” হিসেবেও অভিহিত করছেন। এই ঘটনা ট্রাম্পের রাজনৈতিক শক্তি ও জনপ্রিয়তা আরও বাড়িয়ে তুলেছে, বিশেষ করে তার প্রার্থীতা ও নির্বাচনী প্রচারণার সময়। এটি তার সমর্থকদের দৃঢ় আস্থার প্রতীক হিসেবে প্রকাশ পাচ্ছে।
একজন সমর্থক জানান , আমাদের দেশ নির্বাচনী যুদ্ধে হেরে যাচ্ছে। এবং এই পরিস্থিতিতে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সমর্থন করার জন্য সবকিছু করতে প্রস্তুত। এই সমর্থক আরও বলেন, যদি প্রয়োজন হয়, ট্রাম্পের জন্য বুলেটের সামনে দাঁড়াতেও রাজি।
আরেকজন সমর্থক ডোনাল্ড ট্রাম্পকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, আমি বিশ্বাস করি আপনাকে ঈশ্বর প্রেরণ করেছেন।” তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, আব্রাহাম লিঙ্কনের বিখ্যাত বাণী ছিল, “জনগণের দ্বারা, জনগণের জন্য, জনগণের সরকার।” এই প্রতিশ্রুতি রক্ষার জন্যই ট্রাম্পকে পাঠানো হয়েছে।
এমন পরিস্থিতির মধ্যেও ৭৮ বছর বয়সী ডোনাল্ড ট্রাম্প জোর প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। নিউইয়র্কের ইউনিয়নডেলে এক নির্বাচনী সভায় তিনি জানান, বারবার হত্যার চেষ্টা তার মনোবল বাড়িয়েছে কয়েকগুণ।
ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘মৃত্যুর সঙ্গে মুখোমুখি হওয়ায় আমার মনোবল ভাঙ্গেনি। এতে আমার লক্ষ্য আরো দৃঢ় হয়েছে। অ্যামেরিকাকে আবারো সর্বশ্রেষ্ঠ ও শীর্ষে রাখার ক্ষেত্রে হত্যা চেষ্টা আমার সময় নষ্ট করে বাধা তৈরি করেছে ।’
এদিকে, ওয়াশিংটন ডিসিতে লাতিন ভোটারদের কনফারেন্সে কামালা হ্যারিস ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসন বিষয়ক পরিকল্পনার তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, সীমান্ত সুরক্ষিত রাখতে ট্রাম্পের পরিকল্পিত গণনির্বাসন বা বিশাল বন্দিশালার কোনো প্রয়োজন নেই। হ্যারিস এইসময় ঘোষণা করেন, নির্বাচিত হলে তার সরকার প্রথমবারের মতো বাড়ি কেনার ক্ষেত্রে ২৫ হাজার ডলার সহায়তা দেবে।
কামালা হ্যারিস বলেন, ‘আমরা যখন দেশকে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে নিতে কাজ করছি, সেসময় ট্রাম্প ও তার কট্টর মিত্ররা আমাদেরকে পেছনের দিকে ঠেলে দিতে চাচ্ছে। পরিবারকে ভাঙ্গতে তারা কী করেছে, তা আমরা জানি। এখন তারা ইতিহাসের গণনির্বাসন চাইছে। চিন্তা করুন কীভাবে এটি হবে? বড় অভিযান আর বড় বন্দিশালা। এটা কোনো কথা?’
এদিকে, ডোনাল্ড ট্রাম্প কিংবা কামালা হ্যারিস, উভয়কেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সমর্থন না দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে অ্যামেরিকার সবচেয়ে বড় শ্রমিক ইউনিয়ন টিমস্টার্স। তবে, একটি জরিপে দেখা গেছে, এই শ্রমিক ইউনিয়নের প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ সদস্যের মধ্যে ৬০ শতাংশই ট্রাম্পকে ভোট দিতে আগ্রহী।

previous post
next post