জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এই বৈঠকে দুই নেতা বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক ও আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছে।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে তারা সাক্ষাৎ করেন।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর গত ৩০ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ফোনালাপে কথা বলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। এ সময় তিনি অধ্যাপক ইউনূসকে অভিনন্দন জানান এবং আশা প্রকাশ করেন যে, বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক আরও মজবুত হবে। তিনি উল্লেখ করেন, এই সম্পর্ক দক্ষিণ এশিয়ার দুই দেশের জনগণের জন্য সহায়ক সহযোগিতায় রূপান্তরিত হতে পারে।
ফোনালাপে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত করার ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি উল্লেখ করেন যে, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে ঐতিহাসিক, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক বন্ধন রয়েছে, যা দুই দেশের সম্পর্ককে আরও ঘনিষ্ঠ করতে পারে। শাহবাজ শরিফ বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধি, সাংস্কৃতিক বিনিময় এবং জনগণের মধ্যে যোগাযোগ আরও শক্তিশালী করার ব্যাপারে তার গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেন।
ফোনালাপের শেষ পর্যায়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ একমত হন যে, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের জনগণের অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির জন্য উভয় দেশকে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে হবে। তারা আরও সম্মত হন যে, বৃহত্তর আঞ্চলিক সহযোগিতা দক্ষিণ এশিয়ার জনগণের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। ফোনের জন্য শাহবাজ শরিফকে ধন্যবাদ জানান ড. ইউনূস এবং ভবিষ্যতে দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার প্রতিশ্রুতি দেন।
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ বৈঠকে প্রেসিডেন্ট বাইডেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে তার ‘পূর্ণ সমর্থনের’ আশ্বাস দেন। বৈঠকের পর রাত ৯টা ২০ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এই তথ্য জানানো হয়।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া পোস্টে উল্লেখ করা হয়, বৈঠকে ড. ইউনূস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে বাংলাদেশের বিগত সরকারের আমলে ঘটে যাওয়া নিপীড়নের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের সাহসী ভূমিকা এবং দেশ পুনর্গঠনে তাদের গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কথা জানান। তিনি জোর দিয়ে বলেন, দেশের পুনর্গঠনের যে দায়িত্ব অন্তর্বর্তী সরকার নিয়েছে, তা সফলভাবে সম্পন্ন করতেই হবে।
বৈঠকে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে যেকোনো প্রয়োজনে পাশে থাকার আশ্বাস দেন।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোসহ বেশ কয়েকজন বিশ্বনেতার সঙ্গে বৈঠক করেন। ড. ইউনূস এবং ট্রুডোর সংক্ষিপ্ত বৈঠকে দুই দেশের সম্পর্ক জোরদার, প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার এবং বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হয়। ট্রুডো বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠানগুলোকে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে তার সমর্থন ও সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেন।